মধ্যপ্রাচ্যে ফের যুদ্ধের প্রহর গোনা শুরু হয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই দেশের প্রাণহানির সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ২ জন, আহত হয়েছেন অন্তত ৬২ জন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ জনে। আহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি।
শনিবার মধ্যরাত থেকে নতুন করে ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, তেহরানের মেহরাবাদ বিমানবন্দরে হামলা চালানো হয়েছে। ইসফাহানে ইসরায়েলি ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে সক্রিয় হয়েছে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী। রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট। বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে আয়াতুল্লাহ খামেনি ও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির বাসভবন ও অফিস এলাকায়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ইসরায়েল ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ও প্রেসিডেন্ট রাইসিকে লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা করেছে। এর জবাবে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন খামেনি। তিনি বলেন, “তাদের জীবন নিঃসন্দেহে তিক্ত হয়ে উঠবে। যদি তারা মনে করে এই আঘাতেই সব শেষ, তাহলে জানিয়ে দিচ্ছি—যুদ্ধ শুরু করেছে যারা, তার শেষও আমরাই করব। কেউ অক্ষত থাকবে না।”
ইসরায়েল দাবি করেছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া তিনটি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা সাইরেন বাজতে শোনা গেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
এদিকে, ইরান হুঁশিয়ার করে বলেছে—যে কোনো দেশ ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে এই হামলায় বাধা দিলে, সেই দেশের সামরিক ঘাঁটিও হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের দূতাবাস সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। তেল আবিব কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি ও ইহুদি নাগরিকদের জনসমক্ষে দেশ-সংশ্লিষ্ট প্রতীক ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে।
তীব্র এই সামরিক উত্তেজনায় গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধের শঙ্কা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মহল শান্তিপূর্ণ সমাধান ও কূটনীতির পথে ফেরার আহ্বান জানালেও, আপাতত উভয় পক্ষই আগ্রাসী অবস্থানে রয়েছে।