ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘শহীদ তুরাব স্ট্যান্ড’ নামকরণ চার বছরে এসএসসি পরীক্ষার্থী কমেছে তিন লাখের বেশি চাঁদপুরে পুকুর খননের সময় মিলল পুরনো থ্রি নট থ্রি রাইফেল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে আইন উপদেষ্টা পদে নিয়োগ প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত, অভিযুক্ত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানে বাড়ছে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও

গাজায় নিহত সিনওয়ারের ছবি সম্বলিত লিফলেট ছড়াচ্ছে ইসরায়েল

মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র প্রতিরোধ ও রাজনৈতিক সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর সেই ছবি সম্বলিত লিফলেট বিমান থেকে গাজা উপত্যকায় ফেলছে ইসার‍ায়েল। এতে লেখা রয়েছে, ‘হামাস আর গাজা শাসন করবে না’, যা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত ভাষার প্রতিধ্বনি।

 

আরবিতে লেখা লিফলেটটিতে আরো লেখা হয়েছে, ‘কেউ যদি অস্ত্র ফেলে দেয় এবং জিম্মিদের ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেয়, তাকে চলে যেতে এবং শান্তিতে বসবাস করার অনুমতি দেয়া হবে।’

গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) মিশরীয় সীমান্তের কাছে দক্ষিণে রাফাতে ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর একটি বিবৃতিতেও এসব কথা বলা হয়। সেই বিবৃতি থেকেই লিফলেটে কথাগুলো লেখা হয়েছে।

লিফলেট ফেলার পাশাপাশি বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আদেশ জারি করেছে ইসরায়েল। স্থানীয় বাসিন্দা এবং চিকিৎসকরা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়াতে তাদের অবরোধ আরো কঠোর করেছে। সেখানকার ৮টি ঐতিহাসিক শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে বড়, বেইত হানুন এবং বেইত লাহিয়া শহরের কাছে ট্যাংক পাঠিয়ে ঘিরে রেখেছে। যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন যে সরিয়ে নেয়ার আদেশের উদ্দেশ্য ছিল বেসামরিক নাগরিকদের থেকে হামাস যোদ্ধাদের আলাদা করা। জাবালিয়া বা অন্যান্য উত্তরাঞ্চল থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে দেয়ার কোনও পদ্ধতিগত পরিকল্পনার কথাও তারা অস্বীকার করেছে।

তবে বাসিন্দা ও চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী বাড়িঘরে বোমাবর্ষণ করছে এবং হাসপাতাল ঘেরাও করে রেখেছে। ক্যাম্প ছেড়ে যেতে বাধ্য করতে সেখানে চিকিৎসা ও খাদ্যসামগ্রী প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে দখলদার বাহিনী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা হাসপাতাল খালি বা রোগীদের ছেড়ে দেয়ার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ অনেকের অবস্থা গুরুতর এবং এই আদেশ অযৌক্তিক।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল, কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এবং আল-আওদা হাসপাতালকে ঘেরাও করে সরাসরি তা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় থাকা দুই রোগী হাসপাতালের অবরোধ এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে মারা গেছেন। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে ওই এলাকায় কর্মরত সৈন্যদের বেসামরিক এবং চিকিৎসা অবকাঠামোর ক্ষতি কমানোর জন্য গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। উত্তরে জাবালিয়াতে হাসপাতালগুলোর চারপাশে অভিযান কঠোর করার পর এই হতাহতের খবর সামনে এলো। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের হামলায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলা আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া লক্ষাধিক মানুষ আহত এবং ১০ হাজারের বেশি মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

এদিন কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকার আল-মাগজাইয়ের শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন এবং নুসিরাতের নিকটবর্তী শিবিরে অপর এক হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এবং রাফা শহরে দুটি পৃথক হামলায় আরো পাঁচজন নিহত হয়েছে। আর চিকিৎসকরা বলেছেন, উত্তর গাজা উপত্যকার শাতি ক্যাম্পে সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) চিকিৎসকরা জানান, ইসরায়েলি হামলায় জাবালিয়ায় কমপক্ষে তিনটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ৩৩  জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং অন্তত ৮৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয়।

শনিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান সামরিক হামলায় গত দুই সপ্তাহে গাজার উত্তরে ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গত ৬ অক্টোবর দখলদার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে জাবালিয়া, বেত লাহিয়া এবং বেত হানুনসহ উত্তর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু এলাকা থেকে ৪০০ জনেরও বেশি শহিদকে উদ্ধার করেছি।’

সূত্র: রয়টার্স

জনপ্রিয়

ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ

গাজায় নিহত সিনওয়ারের ছবি সম্বলিত লিফলেট ছড়াচ্ছে ইসরায়েল

প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র প্রতিরোধ ও রাজনৈতিক সংগঠন হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর সেই ছবি সম্বলিত লিফলেট বিমান থেকে গাজা উপত্যকায় ফেলছে ইসার‍ায়েল। এতে লেখা রয়েছে, ‘হামাস আর গাজা শাসন করবে না’, যা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহৃত ভাষার প্রতিধ্বনি।

 

আরবিতে লেখা লিফলেটটিতে আরো লেখা হয়েছে, ‘কেউ যদি অস্ত্র ফেলে দেয় এবং জিম্মিদের ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেয়, তাকে চলে যেতে এবং শান্তিতে বসবাস করার অনুমতি দেয়া হবে।’

গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) মিশরীয় সীমান্তের কাছে দক্ষিণে রাফাতে ইসরায়েলি সৈন্যদের হাতে সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর একটি বিবৃতিতেও এসব কথা বলা হয়। সেই বিবৃতি থেকেই লিফলেটে কথাগুলো লেখা হয়েছে।

লিফলেট ফেলার পাশাপাশি বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার আদেশ জারি করেছে ইসরায়েল। স্থানীয় বাসিন্দা এবং চিকিৎসকরা বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী জাবালিয়াতে তাদের অবরোধ আরো কঠোর করেছে। সেখানকার ৮টি ঐতিহাসিক শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে বড়, বেইত হানুন এবং বেইত লাহিয়া শহরের কাছে ট্যাংক পাঠিয়ে ঘিরে রেখেছে। যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন যে সরিয়ে নেয়ার আদেশের উদ্দেশ্য ছিল বেসামরিক নাগরিকদের থেকে হামাস যোদ্ধাদের আলাদা করা। জাবালিয়া বা অন্যান্য উত্তরাঞ্চল থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে দেয়ার কোনও পদ্ধতিগত পরিকল্পনার কথাও তারা অস্বীকার করেছে।

তবে বাসিন্দা ও চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী বাড়িঘরে বোমাবর্ষণ করছে এবং হাসপাতাল ঘেরাও করে রেখেছে। ক্যাম্প ছেড়ে যেতে বাধ্য করতে সেখানে চিকিৎসা ও খাদ্যসামগ্রী প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে দখলদার বাহিনী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা হাসপাতাল খালি বা রোগীদের ছেড়ে দেয়ার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ অনেকের অবস্থা গুরুতর এবং এই আদেশ অযৌক্তিক।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল, কামাল আদওয়ান হাসপাতাল এবং আল-আওদা হাসপাতালকে ঘেরাও করে সরাসরি তা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যায় থাকা দুই রোগী হাসপাতালের অবরোধ এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে মারা গেছেন। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে ওই এলাকায় কর্মরত সৈন্যদের বেসামরিক এবং চিকিৎসা অবকাঠামোর ক্ষতি কমানোর জন্য গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি সামরিক হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। উত্তরে জাবালিয়াতে হাসপাতালগুলোর চারপাশে অভিযান কঠোর করার পর এই হতাহতের খবর সামনে এলো। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের হামলায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলা আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪২ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া লক্ষাধিক মানুষ আহত এবং ১০ হাজারের বেশি মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।

এদিন কেন্দ্রীয় গাজা উপত্যকার আল-মাগজাইয়ের শিবিরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় ১১ জন এবং নুসিরাতের নিকটবর্তী শিবিরে অপর এক হামলায় চারজন নিহত হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এবং রাফা শহরে দুটি পৃথক হামলায় আরো পাঁচজন নিহত হয়েছে। আর চিকিৎসকরা বলেছেন, উত্তর গাজা উপত্যকার শাতি ক্যাম্পে সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) চিকিৎসকরা জানান, ইসরায়েলি হামলায় জাবালিয়ায় কমপক্ষে তিনটি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ৩৩  জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং অন্তত ৮৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে তারা এই ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয়।

শনিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান সামরিক হামলায় গত দুই সপ্তাহে গাজার উত্তরে ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘গত ৬ অক্টোবর দখলদার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে জাবালিয়া, বেত লাহিয়া এবং বেত হানুনসহ উত্তর গাজা উপত্যকার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু এলাকা থেকে ৪০০ জনেরও বেশি শহিদকে উদ্ধার করেছি।’

সূত্র: রয়টার্স