বরগুনার বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীতে নিষিদ্ধ বাঁধা জাল, ভোগজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে অবাধে ধরা হচ্ছে ইলিশের পোনা। এসব পোনা মাছ স্থানীয় হাটবাজারে ‘চাপিলা’ বলে বিক্রি হচ্ছে, আবার কিছু মাছ দিয়ে তৈরি হচ্ছে শুঁটকি। সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে এই অনিয়মে যুক্ত রয়েছেন একশ্রেণির অসাধু জেলে, যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন শতাধিক নৌকায় প্রতিদিন ভাসা জাল ফেলে জাটকা, পোয়া, তপসি, টেংরা প্রভৃতি ছোট মাছ ধরা হচ্ছে। এসব মাছ প্রকাশ্যে হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে, যা দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের চোখের সামনেই।
রুহিতা গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, “প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিদিনই নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরা হচ্ছে। চোখের সামনে আইন লঙ্ঘন হচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
অথচ মৎস্য আইন অনুযায়ী, সোয়া চার ইঞ্চির কম পরিধির ফাঁসের জাল ব্যবহার সম্পূর্ণ দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু নদীতে ব্যবহার হচ্ছে আধা ইঞ্চির কম পরিধির জাল, যা পোনা নিধনের বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনের নাকের ডগায় পোনা নিধন চলছে। এভাবে চললে ভবিষ্যতে নদীতে পানি থাকবে, কিন্তু মাছ থাকবে না।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন জানিয়েছেন, “গত মাস থেকে আমরা ৫০টিরও বেশি অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে জনবল স্বল্পতার কারণে সব এলাকায় একযোগে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও নদীতে টহল জোরদার করা হয়েছে।”
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত অভিযান না চালালে এবং নিষিদ্ধ জাল উচ্ছেদের পাশাপাশি জেলেদের সচেতন না করলে ইলিশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা আরও গভীর হবে। দেশের জাতীয় মাছ ইলিশের অস্তিত্ব রক্ষায় এখনই প্রয়োজন কঠোর ব্যবস্থা ও সমন্বিত উদ্যোগ।