দীর্ঘদিন অ্যাপ স্টোরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার অভিযোগে এবার আইনের মুখোমুখি হয়েছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। জনপ্রিয় ভিডিও গেম ‘ফোর্টনাইট’-এর নির্মাতা এপিক গেমসের দায়ের করা মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, অ্যাপল আদালতের আদেশ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন’ করেছে এবং প্রতিষ্ঠানটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা শপথ করে ‘মিথ্যা’ বলেছেন।
বিচারক ইয়োভন গঞ্জালেজ রজার্স বুধবারের রায়ে জানান, এই গুরুতর অনিয়মের বিষয়ে তদন্তের জন্য বিষয়টি মার্কিন অ্যাটর্নির দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক নিজেই আদালতের আদেশ অমান্য করার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছিলেন—যা তিনি ‘দূরদর্শিতা বর্জিত’ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, অ্যাপলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অফ ফিন্যান্স অ্যালেক্স রোমান অ্যাপ স্টোরের বাইরে ২৭ শতাংশ ফি আরোপের বিষয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। যদিও অ্যাপল জানিয়েছে, তারা রায়ের সঙ্গে ‘দৃঢ়ভাবে দ্বিমত’ পোষণ করে, তবে আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে এবং আপিল করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে এপিক গেমস এ মামলা দায়ের করে, যেখানে অভিযোগ ছিল অ্যাপলের একচেটিয়া নীতিমালা ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতা খর্ব করছে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা ব্যাহত করছে। আদালতের রায়ে বলা হয়, অ্যাপল কোনো অ্যাপ ডেভেলপারকে নিজস্ব ওয়েবসাইটে পেমেন্ট লিংক দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।
তবে বাস্তবে নানা শর্ত আরোপ ও অতিরিক্ত ফি নির্ধারণ করে অ্যাপল রায় বাস্তবায়ন ব্যাহত করেছে বলে বিচারকের মন্তব্য। প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় শুধু একটি মামলার নিষ্পত্তি নয়—এটি প্রযুক্তি খাতে জবাবদিহিতার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
এপিক গেমসের প্রধান নির্বাহী টিম সুইনি এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “ফোর্টনাইট আগামী সপ্তাহে মার্কিন অ্যাপ স্টোরে ফিরছে।” তার এ ঘোষণায় প্রযুক্তি খাতে নতুন ভারসাম্যের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে—বড় টেক কোম্পানিগুলোর ওপর কতটা নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা সম্ভব এবং তারা কি সত্যিই আইনের ঊর্ধ্বে?