ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী জেলের ছদ্মবেশে মাদক পাচারকালে ২ মায়ানমার নাগরিক আটক নতুন নোটে বিড়ম্বনা, নিচ্ছে না এটিএম ও মেট্রো রেলের বুথ বাংলাদেশে নতুন পাকিস্তানি হাইকমিশনার নিযুক্ত হলেন ইমরান হায়দার উত্তরায় র‌্যাব পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই: গ্রেফতার ৫, উদ্ধার নগদ অর্থ ও গাড়ি দেশি ফলের চাহিদা বাড়াতে জাতীয় ফল মেলা উদ্বোধন, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের আহ্বান উপদেষ্টার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ‘এমওপি’ ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’ গঠনে একমত এনসিপি ও এবি পার্টি চট্টগ্রামে গ্যাস সংকট: মহেশখালী এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হলি আর্টিজান হামলা মামলায় সাতজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ‘এমওপি’

ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সক্ষম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ‘নন-নিউক্লিয়ার’ বোমা GBU-57A/B Massive Ordnance Penetrator (MOP) এখনো ব্যবহার করেনি ইসরাইল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই বোমাটি ইসরাইলের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো।

বোমাটি পারমাণবিক না হলেও একে বলা হয় ‘বাংকার ব্লাস্টার’। এর ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড (১৩,৬০০ কেজি)। এটি ছয় মিটার লম্বা এবং ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে প্রবেশ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। এই বোমা বহন করতে সক্ষম একমাত্র বিমান হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক B-2 Spirit stealth bomber

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে ফরদো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সুরক্ষিত। এটি তেহরান থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে ক্বোম শহরের কাছে একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং প্রায় ৮০ মিটার পাথরের গভীরে নির্মিত।

সম্প্রতি ইসরাইল তেহরানে এবং আশপাশের কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এতে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পস (IRGC)-এর প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হন বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। তবে ফরদো স্থাপনাটি এখনও অক্ষত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্র্যাডফোর্ডের পিস স্টাডিজ বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক পল রজার্স বলেন, “ইরান যদি সত্যিই ফরদোর মতো গভীর বাংকারে পারমাণবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে, তবে সেগুলো ধ্বংস করতে এমওপি ছাড়া বিকল্প নেই। তবে এই বোমা ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িত থাকা আবশ্যক।”

তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলের হাতে এমওপি নেই, এবং যুক্তরাষ্ট্র এখনো তাদের এটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রও চাইছে না, ইসরাইল এককভাবে এত বড় সামরিক অভিযানে যাক।”

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে এখনো সরাসরি কোনো অবস্থান না নিলেও ধারণা করা হচ্ছে, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারা এখনো সরাসরি জড়াতে চাচ্ছে না। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইরানের অবস্থান

ইরান সবসময় দাবি করে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA) সম্প্রতি জানিয়েছে, ইরান এমন মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী।

ফরদোসহ ইরানের গভীর পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের উদ্দেশ্য ছিল ফরদো ধ্বংস করা, তবে এমওপি ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। এই অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ফলে এই মুহূর্তে পারমাণবিক উত্তেজনা আরও বাড়বে নাকি শান্তিপূর্ণ সমাধান বের হবে—তা নির্ভর করছে ওয়াশিংটনের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।

জনপ্রিয়

ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়ক যেন মরণফাঁদ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সক্ষম যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা ‘এমওপি’

প্রকাশিত: ৪ ঘন্টা আগে

ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসে সক্ষম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ‘নন-নিউক্লিয়ার’ বোমা GBU-57A/B Massive Ordnance Penetrator (MOP) এখনো ব্যবহার করেনি ইসরাইল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা এই বোমাটি ইসরাইলের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো।

বোমাটি পারমাণবিক না হলেও একে বলা হয় ‘বাংকার ব্লাস্টার’। এর ওজন প্রায় ৩০ হাজার পাউন্ড (১৩,৬০০ কেজি)। এটি ছয় মিটার লম্বা এবং ২০০ ফুট (৬১ মিটার) গভীরে প্রবেশ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। এই বোমা বহন করতে সক্ষম একমাত্র বিমান হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক B-2 Spirit stealth bomber

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর মধ্যে ফরদো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সুরক্ষিত। এটি তেহরান থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে ক্বোম শহরের কাছে একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এবং প্রায় ৮০ মিটার পাথরের গভীরে নির্মিত।

সম্প্রতি ইসরাইল তেহরানে এবং আশপাশের কয়েকটি সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এতে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পস (IRGC)-এর প্রধান হোসেইন সালামি নিহত হন বলে দাবি করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। তবে ফরদো স্থাপনাটি এখনও অক্ষত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্র্যাডফোর্ডের পিস স্টাডিজ বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক পল রজার্স বলেন, “ইরান যদি সত্যিই ফরদোর মতো গভীর বাংকারে পারমাণবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে, তবে সেগুলো ধ্বংস করতে এমওপি ছাড়া বিকল্প নেই। তবে এই বোমা ব্যবহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িত থাকা আবশ্যক।”

তিনি আরও বলেন, “ইসরাইলের হাতে এমওপি নেই, এবং যুক্তরাষ্ট্র এখনো তাদের এটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্রও চাইছে না, ইসরাইল এককভাবে এত বড় সামরিক অভিযানে যাক।”

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

মার্কিন প্রতিরক্ষা নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে এখনো সরাসরি কোনো অবস্থান না নিলেও ধারণা করা হচ্ছে, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারা এখনো সরাসরি জড়াতে চাচ্ছে না। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইরানের অবস্থান

ইরান সবসময় দাবি করে এসেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (IAEA) সম্প্রতি জানিয়েছে, ইরান এমন মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযোগী।

ফরদোসহ ইরানের গভীর পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলের উদ্দেশ্য ছিল ফরদো ধ্বংস করা, তবে এমওপি ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। এই অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এখন পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ফলে এই মুহূর্তে পারমাণবিক উত্তেজনা আরও বাড়বে নাকি শান্তিপূর্ণ সমাধান বের হবে—তা নির্ভর করছে ওয়াশিংটনের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।