পূর্ব আফ্রিকাভিত্তিক সশস্ত্র ও জনপ্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। সম্প্রতি সোমালিয়ায় দলটির বীর মুজাহিদদের ধারাবাহিক ও সমন্বিত আক্রমণে অনেক শহর ও সামরিক ঘাঁটি হারিয়েছে পশ্চিমা সমর্থিত মোগাদিশু সরকার। সেই সাথে আশ-শাবাব মুজাহিদিনরা রাজধানী মোগাদিশুর উপকন্ঠের ১২টি জেলায় সামরিক উপস্থিতি ও টহল বাড়িয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে চলমান এই লড়াইয়ে মোগাদিশু বাহিনীকে সহায়তা করার লক্ষ্যে সোমালিয়ায় নতুন করে সৈন্য মোতায়েন করতে শুরু করেছে তুরস্ক।
শাহাদাহ এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, মোগাদিশু সরকার প্রধানের অনুরোধে তুর্কি সংসদ ও রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের অনুমোদনে সোমালিয়ায় নতুন করে ২৫০০ সৈন্য মোতায়েন করতে শুরু করেছে তুরস্ক। এই লক্ষ্যে গত ১৯শে এপ্রিল থেকে ২১শে এপ্রিলের মধ্যে প্রায় ৫০০ সৈন্য বহনকারী দুটি তুর্কি সামরিক বিমান মোগাদিশুর আদেন আদ্দে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে, যা সোমালিয়ায় তুরস্কের বৃহত্তর সামরিক সদস্য মোতায়েনের প্রথম ধাপ বলে জানা গেছে।
তুরস্কের মোতায়েন করা এই বাহিনীর লক্ষ্য হচ্ছে, সোমালিয়ায় হারাকাতুশ শাবাবের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে পশ্চিমা সমর্থিত বাহিনীকে সহায়তা করা এবং মুজাহিদদের হাতে ভঙ্গুর মোগাদিশু সরকারের পতন রোধ করা।
সোমালিয়ায় তুরস্কের সেনা মোতায়েন এমন এক সময় শুরু হয়েছে, যখন আশ-শাবাব মুজাহিদিনের একদিনের অভিযানে আদান-ইয়াবাল জেলায় তুর্কী প্রশিক্ষিত গরগর ফোর্সের ১৩ কমান্ডার সহ ৪০০ এরও বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে, বন্দী ও আহত হয়েছে আরও শত শত সেনা। অন্যরা জীবন বাঁচাতে মধ্য শাবেলির বৃহত্তর এই জেলাটি ছেড়ে পালিয়েছে।
সূত্রমতে, সোমালিয়ায় নতুন করে মোতায়েন করা এসব তুর্কি সৈন্যদেরকে রাজধানী মোগাদিশুর আল-জাজিরা জেলায় অবস্থিত “তুর্ক সাম” নামে পরিচিত তুর্কি সামরিক ঘাঁটিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঘাঁটিটি আফ্রিকার বৃহত্তম তুর্কি সামরিক ঘাঁটি এবং তুর্কি বাহিনী দ্বারা প্রশিক্ষিত অভিজাত সোমালি “গরগর” ফোর্সের প্রধান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো এই ক্যাম্পটিতে ৩০০ এরও বেশি তুর্কি সামরিক প্রশিক্ষককে মোতায়েন করা হয়। যেখানে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে মোগাদিশু সরকারের সামরিক বাহিনীর জন্য একসাথে ১,৫০০ প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে তুরস্ক। শুধু ২০২৩ সালেই এই ক্যাম্পটিতে মোগাদিশু সরকারের ৫,০০০ সৈন্যকে স্নাতক ডিগ্রি দিয়েছে তুরস্ক।