ঢাকা , বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
আগামী পাঁচ দিন ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে প্রায় অপরিবর্তিত কারাগারে নববর্ষ, তবু হাস্যোজ্জ্বল শাজাহান খান বললেন: ‘বাইরের চেয়ে ভিতরেই ভালো আছি’ দেশ-বিদেশে এস আলম গ্রুপের আরও জমি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান গাইবান্ধায় পরিত্যক্ত কুপে মিলল অজ্ঞাত পরিচয় কিশোরের অর্ধগলিত লাশ নেত্রকোনায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, মুদি দোকানি গ্রেফতার নোয়াখালীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২ আউটসোর্সিং সেবা কর্মীদের জন্য ‘সেবা গ্রহণ নীতিমালা-২০২৫’ জারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির আবেদন শুরু সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন: পাঁচটিতে বাদ পড়েছে নজরুল ইসলাম বাবুর নাম ‘প্রো-বাংলাদেশ’ নীতিই অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার: প্রেস সচিব

উত্তরাখণ্ডে সাতটি মাদ্রাসা সিল, আবারও উত্তেজনা, নেপথ্যে কী?

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হলদওয়ানি জেলায় ফের তীব্র বিতর্ক ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে মাদ্রাসা সিলগাল করার ঘটনা। রোববার (১৩ এপ্রিল) জেলার সাতটি মাদ্রাসা সিল করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এপি বাজপেয়ী জানিয়েছেন, মাদ্রাসাগুলোর কোনো সঠিক নিবন্ধন ছিল না এবং সেগুলো রাজ্য সরকারের শিক্ষা বিভাগ বা উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা বোর্ডে নিবন্ধিত নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এই অভিযানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের শিক্ষা ও আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা উপেক্ষা করেই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা হচ্ছিল। তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সমাজের একাংশ।

এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি একই জেলার বনভুলপুরা এলাকায় একটি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেয় পৌরসভা। তখন উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছে যায়। ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুলিশের তীব্র সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ও পৌরসভার ওপর পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে হামলা চালায়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে পুলিশ থানায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। পরে জনতা ওই থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ছয়জন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন মাত্র ১৬ বছর বয়সী কিশোর।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ করে এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ ১৯ জনের বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এর আগেও স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে, রাজ্যে কোনো ‘অবৈধ’ মাদ্রাসা বা অবৈধ দখল বরদাস্ত করা হবে না। গত জানুয়ারিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টদের অধীনে সমস্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম, অর্থের উৎস, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং সংযোগের উপর কড়া নজরদারি রাখতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজন আরও ঘনীভূত করতে পারে। মানবাধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে যেন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট না করা হয়।

ঘটনার ধারাবাহিকতায় রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের বিপরীতে স্থানীয় বাসিন্দা ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে ক্রমেই ক্ষোভ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে গোটা দেশ।

জনপ্রিয়

আগামী পাঁচ দিন ঝড়বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা, তাপমাত্রা থাকবে প্রায় অপরিবর্তিত

উত্তরাখণ্ডে সাতটি মাদ্রাসা সিল, আবারও উত্তেজনা, নেপথ্যে কী?

প্রকাশিত: ১১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের হলদওয়ানি জেলায় ফের তীব্র বিতর্ক ও উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে মাদ্রাসা সিলগাল করার ঘটনা। রোববার (১৩ এপ্রিল) জেলার সাতটি মাদ্রাসা সিল করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এপি বাজপেয়ী জানিয়েছেন, মাদ্রাসাগুলোর কোনো সঠিক নিবন্ধন ছিল না এবং সেগুলো রাজ্য সরকারের শিক্ষা বিভাগ বা উত্তরাখণ্ড মাদ্রাসা বোর্ডে নিবন্ধিত নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এই অভিযানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্যের শিক্ষা ও আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা উপেক্ষা করেই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা হচ্ছিল। তবে এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে সমাজের একাংশ।

এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি একই জেলার বনভুলপুরা এলাকায় একটি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দেয় পৌরসভা। তখন উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছে যায়। ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানকে কেন্দ্র করে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুলিশের তীব্র সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশ ও পৌরসভার ওপর পাথর ও পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে হামলা চালায়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে পুলিশ থানায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। পরে জনতা ওই থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ছয়জন নিহত হন, যাদের মধ্যে একজন মাত্র ১৬ বছর বয়সী কিশোর।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ করে এবং সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ ১৯ জনের বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এর আগেও স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে, রাজ্যে কোনো ‘অবৈধ’ মাদ্রাসা বা অবৈধ দখল বরদাস্ত করা হবে না। গত জানুয়ারিতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টদের অধীনে সমস্ত মাদ্রাসার কার্যক্রম, অর্থের উৎস, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং সংযোগের উপর কড়া নজরদারি রাখতে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজন আরও ঘনীভূত করতে পারে। মানবাধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে যেন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে টার্গেট না করা হয়।

ঘটনার ধারাবাহিকতায় রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের বিপরীতে স্থানীয় বাসিন্দা ও ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে ক্রমেই ক্ষোভ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে, প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে গোটা দেশ।