বিশ্বের দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। এর জবাবে চীন শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কিছু পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
এই পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নামিয়েছে। ডলার দুর্বল হয়ে পড়েছে, বন্ডবাজারে মূল্য হ্রাস পেয়েছে এবং বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে স্বর্ণ কিনতে শুরু করেছেন, যার ফলে স্বর্ণের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বাণিজ্যবিরোধ দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাবে। শিল্প উৎপাদন, ভোক্তা মূল্য এবং শ্রমবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ইউরোপ, এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চল এই পরিস্থিতিতে নিজেদের কৌশল পুনর্বিবেচনা করছে।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি এই ‘সংখ্যার খেলা’ চালিয়ে যায়, তবে তারা আর অংশ নেবে না, বরং অন্য ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। বেইজিংয়ের মতে, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ অর্থনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও ক্ষতিকর হবে এবং এটি ইতিহাসে তামাশা হিসেবে রেকর্ড হবে।
এদিকে, হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ভিয়েতনামের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে এবং জাপান একটি টাস্কফোর্স গঠন করে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে এমন এক সময়, যখন অনেক দেশ এখনও কোভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধারে ব্যস্ত। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই উত্তেজনা অব্যাহত থাকলে তা শুধু ব্যবসা নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।