ঢাকা , বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
টেকনাফে যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকার জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ ‘আহ্ছানউল্লা দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বেসরকারি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’: অর্থ উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত তিন রিকশাচালককে দেড় লাখ টাকা অনুদান, দেওয়া হবে চাকরিও আ.লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার ঘটনাবলী নিয়ে সচেতন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সাম্য হত্যাকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কোথায়? এনবিআর বিলুপ্তি একটি কসমেটিক সংস্কারমাত্র: মঈন খান সৌদি-ইসরাইল সম্পর্কের পথে ট্রাম্পের কূটনৈতিক চাপ ব্রাজিলের কোচ আনচেলত্তি, আপত্তি লুলার: “বিদেশি কোচের প্রয়োজন নেই” ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে নগরভবন ঘেরাও, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম আন্দোলনকারীদের গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করব না : নেতানিয়াহু

বিব্রতকর হারে ভারত সফর শেষ করল বাংলাদেশ

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিদায়ী ম্যাচটিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারলো না বাংলাদেশ। উল্টো ভারতের রেকর্ডময় ম্যাচে তুলোধুনো হয়ে লজ্জাই উপহার দিলো টাইগাররা। বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ হারলো ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে। এর আগে গোয়ালিয়র ও দিল্লিতে প্রথম দুই টি–টোয়েন্টিতে পাত্তা পায়নি নাজমুল হোসেন শান্তরা। গতকাল শনিবার হায়দরাবাদে ছিল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ আটকে ছিল বরাবরের মতো সেই ১৩০ এর ঘরেই। এদিন লিটন কুমার দাস, তাওহীদ হৃদয়দের কল্যাণে সেটা টেনে নেয়া গেল ৭ উইকেটে ১৬৪ রান পর্যন্ত। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, বরং নিজেদের ইতিহাসে রানের বিবেচনায় সবচেয়ে বড় হার দেখল টাইগাররা। ২৯৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম বলেই মায়াঙ্ক যাদবের বলে ফিরে যান পারভেজ হোসেন ইমন। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে দুটি চার মেরেছেন তানজিদ হাসান। তৃতীয় ওভারে হাত খোলার চেষ্টা করেছেন নাজমুল হোসেনও। মায়াঙ্ক যাদবের প্রথম বলে মেরেছেন ছয়, পঞ্চম বলে চার। পরের ওভারেই অবশ্য তানজিদ তামিম কাট শট খেলে ক্যাচ দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পরাগের হাতে। রবি বিষ্ণয়কে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল ওপরে তুলে দেন নাজমুল হোসেন। তবে লিটন দাস ছিলেন আগ্রাসী। একই ওভারে ৫ চারও মেরেছিলেন ইনিংসের শুরুতে। ২৫ বলে খেলা ৪২ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার। কিন্তু সবকিছু যেদিন বিপক্ষে লিটন সেদিন বড় কিছু করতে পারলেন না। ৪২ রানেই থামলেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ টি–টোয়েন্টিতে মনে রাখার মতো কিছু করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৯ বল খেলে ১ চারে করে যান ৮ রান। থামল ১৪১ ম্যাচের লম্বা এক ক্যারিয়ার। এরপর রিশাদ হোসেনের ডাক, শেখ মেহেদির ৩ রানের ভিড়ে উজ্জ্বল হয়ে থাকল তাওহীদ হৃদয়ের ফিফটি। ৪২ বলে ৫ চার এবং ৩ ছক্কায় ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তাওহীদ হৃদয়। বাংলাদেশের তাতে পরাজয়ের ব্যবধান কমে খানিকটা। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ভারত ৬ উইকেটে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে। তাদের ইনিংসে কেবল দুই ওভারে রান হয়েছে ১০–এর নিচে। বাকি ওভারগুলোতে বল সীমানা ছাড়িয়েছে ইচ্ছেমতো। এর মধ্যে রিশাদ হোসেনের করা দশম ওভারেই পাঁচ ছক্কায় ৩০ রান এসেছে। বাংলাদেশের অপর বোলারদের ওপরও ভয়াবহ তান্ডব চালিয়েছে ভারত। সঞ্জু স্যামসনের দ্রুততম সেঞ্চুরি আর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের ফিফটিতে ভারত টি–টোয়েন্টিতে নিজেদের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৯৭ রান সংগ্রহ করে। তাদের করা এই রান যেকোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান। এতদিন ২৭৮ রান নিয়ে সেই রেকর্ড ছিল আফগানিস্তানের দখলে। স্বীকৃত টি–টোয়েন্টির ইতিহাসে অবশ্য সর্বোচ্চ স্কোরটি এখনও নেপালের দখলে। তারা এশিয়ান গেমসে ৩১৪ রান করেছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। সেই রেকর্ড না ভাঙতে পারলেও নিঃসন্দেহে ভারতের স্কোরবোর্ড আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে ওপরেই থাকবে। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৪ রান। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে স্যামসন–সূর্যকুমার ও হার্দিক পান্ডিয়ারা গতকাল সবমিলিয়ে মেরেছেন ২২টি ছক্কা ও ২৫টি চার। তাদের হয়ে ফরম্যাটটিতে ভারতের হয়ে দ্রুততম (৪০ বলে) সেঞ্চুরি করেন স্যামসন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৭ বলে ১১১ রান, সূর্যকুমার ৩৫ বলে ৭৫, হার্দিক পান্ডিয়া ৪৭ (১৮ বল) এবং রিয়ান পরাগ ৩৪ রান (১৩ বল) করেছেন। পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারানো ভারতের রান ছিল ৮২, এরপর ১০ ওভারে ১৫০ এবং ১৪ ওভারে ২০০ রান তোলে তারা। ৫০ এর বেশি রান দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে তানজিমের দেওয়া ৬৬ রান ফরম্যাটটিতে কোনো বাংলাদেশি বোলারের সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড। যদিও তিনি বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন। এ ছাড়া রিশাদ হোসেন মাত্র ২ ওভারেই ৪৬ রান খরচ করেছেন, ৪৫ রান (৪ ওভার) দিয়েছেন মেহেদী হাসানও। তাসকিন, মোস্তাফিজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটি করে উইকেট নেন। টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২১৩ রান। আর ভারতের বিপক্ষে তারা সর্বোচ্চ ১৬৬ রান করেছিল।

জনপ্রিয়

টেকনাফে যৌতুকের পাঁচ লাখ টাকার জন্য গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

বিব্রতকর হারে ভারত সফর শেষ করল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিদায়ী ম্যাচটিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারলো না বাংলাদেশ। উল্টো ভারতের রেকর্ডময় ম্যাচে তুলোধুনো হয়ে লজ্জাই উপহার দিলো টাইগাররা। বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ হারলো ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে। এর আগে গোয়ালিয়র ও দিল্লিতে প্রথম দুই টি–টোয়েন্টিতে পাত্তা পায়নি নাজমুল হোসেন শান্তরা। গতকাল শনিবার হায়দরাবাদে ছিল সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ। আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশ আটকে ছিল বরাবরের মতো সেই ১৩০ এর ঘরেই। এদিন লিটন কুমার দাস, তাওহীদ হৃদয়দের কল্যাণে সেটা টেনে নেয়া গেল ৭ উইকেটে ১৬৪ রান পর্যন্ত। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, বরং নিজেদের ইতিহাসে রানের বিবেচনায় সবচেয়ে বড় হার দেখল টাইগাররা। ২৯৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম বলেই মায়াঙ্ক যাদবের বলে ফিরে যান পারভেজ হোসেন ইমন। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে দুটি চার মেরেছেন তানজিদ হাসান। তৃতীয় ওভারে হাত খোলার চেষ্টা করেছেন নাজমুল হোসেনও। মায়াঙ্ক যাদবের প্রথম বলে মেরেছেন ছয়, পঞ্চম বলে চার। পরের ওভারেই অবশ্য তানজিদ তামিম কাট শট খেলে ক্যাচ দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পরাগের হাতে। রবি বিষ্ণয়কে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল ওপরে তুলে দেন নাজমুল হোসেন। তবে লিটন দাস ছিলেন আগ্রাসী। একই ওভারে ৫ চারও মেরেছিলেন ইনিংসের শুরুতে। ২৫ বলে খেলা ৪২ রানের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি চার। কিন্তু সবকিছু যেদিন বিপক্ষে লিটন সেদিন বড় কিছু করতে পারলেন না। ৪২ রানেই থামলেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ টি–টোয়েন্টিতে মনে রাখার মতো কিছু করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ৯ বল খেলে ১ চারে করে যান ৮ রান। থামল ১৪১ ম্যাচের লম্বা এক ক্যারিয়ার। এরপর রিশাদ হোসেনের ডাক, শেখ মেহেদির ৩ রানের ভিড়ে উজ্জ্বল হয়ে থাকল তাওহীদ হৃদয়ের ফিফটি। ৪২ বলে ৫ চার এবং ৩ ছক্কায় ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন তাওহীদ হৃদয়। বাংলাদেশের তাতে পরাজয়ের ব্যবধান কমে খানিকটা। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ভারত ৬ উইকেটে ২৯৭ রান সংগ্রহ করে। তাদের ইনিংসে কেবল দুই ওভারে রান হয়েছে ১০–এর নিচে। বাকি ওভারগুলোতে বল সীমানা ছাড়িয়েছে ইচ্ছেমতো। এর মধ্যে রিশাদ হোসেনের করা দশম ওভারেই পাঁচ ছক্কায় ৩০ রান এসেছে। বাংলাদেশের অপর বোলারদের ওপরও ভয়াবহ তান্ডব চালিয়েছে ভারত। সঞ্জু স্যামসনের দ্রুততম সেঞ্চুরি আর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের ফিফটিতে ভারত টি–টোয়েন্টিতে নিজেদের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২৯৭ রান সংগ্রহ করে। তাদের করা এই রান যেকোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান। এতদিন ২৭৮ রান নিয়ে সেই রেকর্ড ছিল আফগানিস্তানের দখলে। স্বীকৃত টি–টোয়েন্টির ইতিহাসে অবশ্য সর্বোচ্চ স্কোরটি এখনও নেপালের দখলে। তারা এশিয়ান গেমসে ৩১৪ রান করেছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। সেই রেকর্ড না ভাঙতে পারলেও নিঃসন্দেহে ভারতের স্কোরবোর্ড আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে ওপরেই থাকবে। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৪ রান। হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে স্যামসন–সূর্যকুমার ও হার্দিক পান্ডিয়ারা গতকাল সবমিলিয়ে মেরেছেন ২২টি ছক্কা ও ২৫টি চার। তাদের হয়ে ফরম্যাটটিতে ভারতের হয়ে দ্রুততম (৪০ বলে) সেঞ্চুরি করেন স্যামসন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৭ বলে ১১১ রান, সূর্যকুমার ৩৫ বলে ৭৫, হার্দিক পান্ডিয়া ৪৭ (১৮ বল) এবং রিয়ান পরাগ ৩৪ রান (১৩ বল) করেছেন। পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারানো ভারতের রান ছিল ৮২, এরপর ১০ ওভারে ১৫০ এবং ১৪ ওভারে ২০০ রান তোলে তারা। ৫০ এর বেশি রান দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমান। এর মধ্যে তানজিমের দেওয়া ৬৬ রান ফরম্যাটটিতে কোনো বাংলাদেশি বোলারের সবচেয়ে বেশি রান খরচের রেকর্ড। যদিও তিনি বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন। এ ছাড়া রিশাদ হোসেন মাত্র ২ ওভারেই ৪৬ রান খরচ করেছেন, ৪৫ রান (৪ ওভার) দিয়েছেন মেহেদী হাসানও। তাসকিন, মোস্তাফিজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একটি করে উইকেট নেন। টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ২১৩ রান। আর ভারতের বিপক্ষে তারা সর্বোচ্চ ১৬৬ রান করেছিল।