জামালপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন এবং দলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক। এই ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, গত মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) রাতে জামালপুর শহরের শফির মিয়ার বাজার এলাকায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাত থেকে ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দুটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। একটিতে দেখা যায়, উত্তেজিত অবস্থায় পিস্তল হাতে কার্যালয়ে প্রবেশ করে সিরাজুল হক বারবার অস্ত্র উঁচিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। তাকে বলতে শোনা যায়, “আমার ফাঁসি হলেও হবে, তাও গাদ্দারকে মেরে ফেলব।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় সিরাজুল হক তার একদল অনুসারী নিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তিনি তাদের “মুনাফেক” বলে গালি দেন এবং পিস্তল প্রদর্শন করেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে সাবেক উপমন্ত্রী সিরাজুল হক জানান, ওই ঘরটি তার ছেলের মালিকানাধীন, যা জেলা বিএনপির অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২৮ বছর ধরে কোনো ভাড়া পরিশোধ না করায় তার ছেলে বাবুর প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। ভাড়া চাইতে গিয়ে তার ছেলেকে মারধরের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
“গাদ্দারকে মেরে ফেলব” মন্তব্য সম্পর্কে তিনি বলেন, তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী এবং বর্তমানে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লোকমান আহম্মেদ লোটনকে উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য করেছেন। তার দাবি, লোটনের সামনেই তার ছেলেকে মারধর করা হলেও তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান এটিকে ‘পারিবারিক বিষয়’ বলে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, “ঘরটি তার মালিকানাধীন, সেটা ঠিক আছে। তবে যেভাবে তিনি বিষয়টি সামাল দিয়েছেন, সেটি গ্রহণযোগ্য নয়।”