ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘শহীদ তুরাব স্ট্যান্ড’ নামকরণ চার বছরে এসএসসি পরীক্ষার্থী কমেছে তিন লাখের বেশি চাঁদপুরে পুকুর খননের সময় মিলল পুরনো থ্রি নট থ্রি রাইফেল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে আইন উপদেষ্টা পদে নিয়োগ প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছুরিকাঘাতে নিহত, অভিযুক্ত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানে বাড়ছে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও

পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়তে পারব না: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশ সদস্যদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইন মেনে পুলিশকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়তে পারব না। তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেই বাকি জিনিসগুলো হয়। আইনশৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই থাকুক, কোনো কাজে আসবে না।’

সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভবিষ্যতে যে সরকার নির্বাচিত হবে, সেটি হবে আইনের শাসনের সরকার, তাই পুলিশকে সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সহজ করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি অনলাইনে মামলার আবেদন গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।’ অধ্যাপক ইউনূস পুলিশ সুপারদের কাজের মূল্যায়নের ওপর জোর দেন, যাতে মাঠপর্যায়ে প্রতিযোগিতা আরও গতিশীল হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ফলে আমরা মস্তবড় সুযোগ পেয়েছি। এটাকে যেন হারিয়ে না ফেলি। আমরাও সেটা চেষ্টা করব, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। দেশে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে কাজে লাগাতে হবে।’

বাংলাদেশের বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশের কাতারে পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘দেশ বদলাতে হলে একক নির্দেশে নয়, বরং সবাইকে নিয়ে একেকটি টিম হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে যত টিম আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিম হলো পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা ইতোমধ্যে সাত মাস পার করেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই করে ফেলতে হবে। আপনারাও সংস্কারের কথা বলেছেন। কারও জন্য অপেক্ষা করে কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার যা কিছুই করতে চায়, শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত দিয়েই করতে হয়। তবে তারা সব করে দেয় না, তারা পরিবেশটা সৃষ্টি করে। যে পরিবেশটা না থাকলে কোনো কাজই আর হয় না।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারবার আমরা দুটো শব্দ বলছি- আইন ও শৃঙ্খলা। পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। এই পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে সরকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের অধিকার, নাগরিকের অধিকার- কিছুই থাকে না।’

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে পুলিশের অত্যন্ত বেগ পেতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।’ এই পথ সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী একটা মস্তবড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা যোগ দেন।

 

সূত্র: বাসস

জনপ্রিয়

ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ

পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়তে পারব না: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত: ১২:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশ সদস্যদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান আইন মেনে পুলিশকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়তে পারব না। তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেই বাকি জিনিসগুলো হয়। আইনশৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই থাকুক, কোনো কাজে আসবে না।’

সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভবিষ্যতে যে সরকার নির্বাচিত হবে, সেটি হবে আইনের শাসনের সরকার, তাই পুলিশকে সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম সহজ করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি অনলাইনে মামলার আবেদন গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।’ অধ্যাপক ইউনূস পুলিশ সুপারদের কাজের মূল্যায়নের ওপর জোর দেন, যাতে মাঠপর্যায়ে প্রতিযোগিতা আরও গতিশীল হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ফলে আমরা মস্তবড় সুযোগ পেয়েছি। এটাকে যেন হারিয়ে না ফেলি। আমরাও সেটা চেষ্টা করব, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দিই। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। দেশে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে কাজে লাগাতে হবে।’

বাংলাদেশের বিশ্বের নেতৃস্থানীয় দেশের কাতারে পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘দেশ বদলাতে হলে একক নির্দেশে নয়, বরং সবাইকে নিয়ে একেকটি টিম হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে যত টিম আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিম হলো পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা ইতোমধ্যে সাত মাস পার করেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই করে ফেলতে হবে। আপনারাও সংস্কারের কথা বলেছেন। কারও জন্য অপেক্ষা করে কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার যা কিছুই করতে চায়, শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত দিয়েই করতে হয়। তবে তারা সব করে দেয় না, তারা পরিবেশটা সৃষ্টি করে। যে পরিবেশটা না থাকলে কোনো কাজই আর হয় না।’

তিনি বলেন, ‘পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারবার আমরা দুটো শব্দ বলছি- আইন ও শৃঙ্খলা। পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। এই পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে সরকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের অধিকার, নাগরিকের অধিকার- কিছুই থাকে না।’

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাজ করতে পুলিশের অত্যন্ত বেগ পেতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এগুলো সমাধানের চেষ্টা করব।’ এই পথ সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী একটা মস্তবড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।

মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম। সভায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১২৭ কর্মকর্তা যোগ দেন।

 

সূত্র: বাসস