সিলেটের সীমান্ত সংলগ্ন গোয়াইনঘাটে গরুর চুরির অভিযোগে দুই লিটার পানির বোতলে চুন ও বালু মিশিয়ে হাত-পা বেঁধে পানি খাওয়ানো হয় হেলাল মিয়াকে (৩৮)। হেলালের মা-বাবাকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক জিম্মি করে তাদের সামনেই এ কাণ্ড ঘটায়। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে গোয়াইনঘাটের রাধানগর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত হেলাল মিয়া গোয়াইনঘাটের ডৌবাড়ী ইউনিয়নের ঘুষগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের মরদেহ গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রাখা হয়েছে। সুরতহাল শেষে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাকিব আহমদ বলেন, ‘হেলাল মিয়া নামে যিনি মারা গেছেন, তার পরিবার আমাদের জানিয়েছেন চুন ও বালু মিশিয়ে পানি তাকে খাওয়ানো হয়েছে। এতে তিনি অসুস্থ হলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সেটি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যাবে। আমরা শুধু তার মৃত্যু হয়েছে বলে সনদ পুলিশকে দিয়েছি।’
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমদ। তিনি জানান, হেলাল মিয়াকে গরু চুরির অভিযোগে মারধর করে স্থানীয় লোকজন। ছেলেকে মারধর করা হচ্ছে খবর পেয়ে মা-বাবা তাকে ছাড়িয়ে আনতে যান। এ সময় হেলালের মা-বাবা যুবকদের হাতে-পায়ে ধরে ছেলেকে আহত অবস্থায় ছাড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন কয়েকজন যুবক হেলালকে জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে আবার মারধর করে।
ওসি জানান, মারধরের একপর্যায়ে কয়েকজন যুবক আধা কেজি চুন ও বালু ২ লিটার পানির মধ্যে মিশিয়ে জোরপূর্বক তাকে খাওয়ায়। এরপরও মা-বাবা হেলালকে ধরে ধরে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের ধরার জন্য পুলিশের একাধিক টিম ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) টিম কাজ করে যাচ্ছে। যতটুকু জেনেছি, বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।’