ঢাকা , মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে আরাফা: তাওবা ও রহমতের মহান দিন হামজা চৌধুরীর আগমনে জোয়ার বাংলাদেশ ফুটবলে, ভুটানের বিপক্ষে আজ প্রস্তুতি ম্যাচ রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ আজ মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা ভাঙ্গায় মাহিন্দ্রা-বাস সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, আহত ৩ মাদরাসা ধ্বংস ঠেকাতে সরকারের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালিয়ে যাবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ মাংস বিক্রেতাদের সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়েছেন ভারতের গাজিয়াবাদ বিধায়ক গুর্জ ইসরাইলের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন ও ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করেছে স্পেন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি: এনবিআর চেয়ারম্যান

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে চান ট্রাম্প

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানাভুক্ত করার সংকল্প ফের ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা উচিত।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। সেখানেই গ্রিনল্যান্ডের প্রসঙ্গটি তোলেন ট্রাম্প।

ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি জানেন মার্ক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের প্রয়োজন। এটা কিন্তু শুধু নিরাপত্তা নয়— আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা। আমাদের অনেক প্রিয় খেলোয়াড় এই দ্বীপের উপকূলের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছে।’

এখানে ‘প্রিয় খেলোয়াড়’ বলতে রাশিয়া এবং চীনকে বুঝিয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে একাধিকবার তিনি বলেছেন, গ্রিনল্যান্ড উপকূলের সমুদ্রে চীন এবং রাশিয়ার উপস্থিতি বাড়ছে এবং এটি যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি এটা (গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা) আমাদের হাতে আসবে। আর আমি শুধু ভাবছি; এর আগে অবশ্য এ ব্যাপারে খুব বেশি ভাবিনি, কিন্তু আমি এমন একজনের সঙ্গে বসে আছি যিনি (এ ব্যাপারে) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। নিকট ভবিষ্যতেই এ ব্যাপারে আমরা আপনার সঙ্গে কথা বলব।’

ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে মার্ক রুট তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে গ্রিনল্যান্ডে সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে জয়ী রাজনৈতিক দল ডেমোক্রাটিট পার্টির শীর্ষ নেতা জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক বার্তায় নিলসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য একেবারেই অযথাযথ এবং এই বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, নিকট ভবিষ্যতে গ্রিনল্যান্ডের স্বার্থে আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে হবে।’

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের নিজেদের সীমানা বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমার মনে হয় যথেষ্ট হয়েছে এবং এখন তার থামা উচিত।’

প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে হলেও এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ। এ দ্বীপের বাসিন্দারাও ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

আর্কটিক এবং আটলান্টিক সাগরকে পৃথককারী এই দ্বীপটির নাম গ্রিনল্যান্ড হলেও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থান হওয়ার কারণে বছরের একটি বড় সময়ই তুষারাচ্ছাদিত থাকে এ ভূখণ্ড। দ্বীপটির ভূপৃষ্ঠের গভীরে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য নতুন নয় ট্রাম্পের। এর আগে যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ২০১৯ সালে একবার তিনি বলেছিলেন যে ‘কৌশলগত কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বীপটি কিনে নেওয়া উচিত।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর গ্রিনল্যান্ড ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।’

সে সময়েও তার জবাব দিয়েছিলেন মিউটে। ফেসবুকে এক পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।’

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ড দখলে নিতে চান ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৪:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানাভুক্ত করার সংকল্প ফের ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা উচিত।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। সেখানেই গ্রিনল্যান্ডের প্রসঙ্গটি তোলেন ট্রাম্প।

ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি জানেন মার্ক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের প্রয়োজন। এটা কিন্তু শুধু নিরাপত্তা নয়— আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা। আমাদের অনেক প্রিয় খেলোয়াড় এই দ্বীপের উপকূলের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছে।’

এখানে ‘প্রিয় খেলোয়াড়’ বলতে রাশিয়া এবং চীনকে বুঝিয়েছেন ট্রাম্প। এর আগে একাধিকবার তিনি বলেছেন, গ্রিনল্যান্ড উপকূলের সমুদ্রে চীন এবং রাশিয়ার উপস্থিতি বাড়ছে এবং এটি যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি এটা (গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা) আমাদের হাতে আসবে। আর আমি শুধু ভাবছি; এর আগে অবশ্য এ ব্যাপারে খুব বেশি ভাবিনি, কিন্তু আমি এমন একজনের সঙ্গে বসে আছি যিনি (এ ব্যাপারে) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। নিকট ভবিষ্যতেই এ ব্যাপারে আমরা আপনার সঙ্গে কথা বলব।’

ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে মার্ক রুট তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে গ্রিনল্যান্ডে সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে জয়ী রাজনৈতিক দল ডেমোক্রাটিট পার্টির শীর্ষ নেতা জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন ট্রাম্পের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এক বার্তায় নিলসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য একেবারেই অযথাযথ এবং এই বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, নিকট ভবিষ্যতে গ্রিনল্যান্ডের স্বার্থে আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে হবে।’

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের নিজেদের সীমানা বাড়ানোর কথা বলেছেন। আমার মনে হয় যথেষ্ট হয়েছে এবং এখন তার থামা উচিত।’

প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। এই জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই ইনুইট জাতিগোষ্ঠীভুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের অবস্থান উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে হলেও এই দ্বীপটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ। এ দ্বীপের বাসিন্দারাও ডেনমার্ক এবং ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক।

আর্কটিক এবং আটলান্টিক সাগরকে পৃথককারী এই দ্বীপটির নাম গ্রিনল্যান্ড হলেও উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থান হওয়ার কারণে বছরের একটি বড় সময়ই তুষারাচ্ছাদিত থাকে এ ভূখণ্ড। দ্বীপটির ভূপৃষ্ঠের গভীরে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদরা।

গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য নতুন নয় ট্রাম্পের। এর আগে যখন প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সে সময় ২০১৯ সালে একবার তিনি বলেছিলেন যে ‘কৌশলগত কারণে’ যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বীপটি কিনে নেওয়া উচিত।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর গ্রিনল্যান্ড ক্রয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।’

সে সময়েও তার জবাব দিয়েছিলেন মিউটে। ফেসবুকে এক পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা বিক্রির জন্য নই এবং কখনও এমনটা ঘটবে না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি এবং নিশ্চিতভাবেই তা আমরা বৃথা যেতে দেবো না।’