ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধার টাঙ্গাইলে অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু শায়েস্তাগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১৫ টি দোকান বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক
গুরুত্ব দেওয়া হবে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবাধিকার ইস্যু

জাতিসংঘের মহাসচিব চার দিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। প্রায় সাত বছর পর তাঁর এই দ্বিতীয় সফরে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং মানবাধিকার ইস্যু অগ্রাধিকার পাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন গুতেরেস। এরপর তাঁরা দুজনে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন। সেখানে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারেও অংশ নেবেন।

 

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রমজান মাসে সংহতি জানাতেই গুতেরেস বাংলাদেশে আসছেন। তিনি প্রতিবছর রমজান মাসে মুসলিম দেশগুলোতে সফর করেন। এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার, নির্বাচন এবং জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারের সময়ে বাংলাদেশিদের পাশে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কী ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হবে এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো কী, তা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার জাতিসংঘকে জানাবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

 

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে গুতেরেস সরাসরি হোটেলে যাবেন। পরদিন সকালে হোটেলে তাঁর সঙ্গে প্রথমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে বৈঠক করবেন গুতেরেস। বৈঠক শেষে তাঁরা কক্সবাজারে যাবেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করবেন।

 

রোহিঙ্গা শিবিরে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা নিজ নিজ কার্যক্রম সম্পর্কে গুতেরেসকে ব্রিফ করবেন। শরণার্থীশিবির পরিদর্শনের পর রোহিঙ্গা ও পবিত্র রমজানের প্রতি সংহতি জানিয়ে সেখানেই ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফিরে যাবেন গুতেরেস ও প্রধান উপদেষ্টা।

 

আগামী শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে যাবেন গুতেরেস। সেখানে জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। দুপুরে হোটেলে ফিরে গোলটেবিল বৈঠক ও বাংলাদেশের যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকেলে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার আয়োজনে ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেবেন গুতেরেস। রোববার সকালে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি।

 

এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে গৃহযুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বাংলাদেশকে জানিয়েছে, রাখাইনের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা না করা গেলে শুধু রোহিঙ্গা নয়, সেখানকার অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে। তাই দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছে জাতিসংঘ। তবে বাংলাদেশ এখনো এই অনুরোধকে ইতিবাচকভাবে দেখছে না এবং নিরাপত্তাসহ অন্যান্য ঝুঁকির বিষয় বিবেচনা করছে।

জনপ্রিয়

ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ

গুরুত্ব দেওয়া হবে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবাধিকার ইস্যু

জাতিসংঘের মহাসচিব চার দিনের সফরে বাংলাদেশ আসছেন

প্রকাশিত: ০৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আগামী বৃহস্পতিবার চার দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। প্রায় সাত বছর পর তাঁর এই দ্বিতীয় সফরে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং মানবাধিকার ইস্যু অগ্রাধিকার পাবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন গুতেরেস। এরপর তাঁরা দুজনে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যাবেন। সেখানে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতারেও অংশ নেবেন।

 

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস জানান, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রমজান মাসে সংহতি জানাতেই গুতেরেস বাংলাদেশে আসছেন। তিনি প্রতিবছর রমজান মাসে মুসলিম দেশগুলোতে সফর করেন। এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়েও আলোচনা হবে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে সংস্কার, নির্বাচন এবং জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে গোয়েন লুইস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারের সময়ে বাংলাদেশিদের পাশে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কী ধরনের সহযোগিতা চাওয়া হবে এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো কী, তা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার জাতিসংঘকে জানাবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।

 

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে গুতেরেস সরাসরি হোটেলে যাবেন। পরদিন সকালে হোটেলে তাঁর সঙ্গে প্রথমে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি-সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে বৈঠক করবেন গুতেরেস। বৈঠক শেষে তাঁরা কক্সবাজারে যাবেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির পরিদর্শন করবেন।

 

রোহিঙ্গা শিবিরে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা নিজ নিজ কার্যক্রম সম্পর্কে গুতেরেসকে ব্রিফ করবেন। শরণার্থীশিবির পরিদর্শনের পর রোহিঙ্গা ও পবিত্র রমজানের প্রতি সংহতি জানিয়ে সেখানেই ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফিরে যাবেন গুতেরেস ও প্রধান উপদেষ্টা।

 

আগামী শনিবার ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে যাবেন গুতেরেস। সেখানে জাতিসংঘের কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। দুপুরে হোটেলে ফিরে গোলটেবিল বৈঠক ও বাংলাদেশের যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকেলে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার আয়োজনে ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেবেন গুতেরেস। রোববার সকালে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি।

 

এদিকে, মিয়ানমারের রাখাইনে গৃহযুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বাংলাদেশকে জানিয়েছে, রাখাইনের দুর্ভিক্ষ মোকাবিলা না করা গেলে শুধু রোহিঙ্গা নয়, সেখানকার অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সদস্যরাও সীমান্ত অতিক্রম করতে পারে। তাই দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সহযোগিতা চাইছে জাতিসংঘ। তবে বাংলাদেশ এখনো এই অনুরোধকে ইতিবাচকভাবে দেখছে না এবং নিরাপত্তাসহ অন্যান্য ঝুঁকির বিষয় বিবেচনা করছে।