ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় মুখোশধারীদের পেট্রলবোমা হামলা, দগ্ধ ২ নারী হাতিরঝিলে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত যুবদলকর্মী, অবস্থা আশংকাজনক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ডা. সুমিত সাহা গ্রেফতার রবার্ট এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজার নথি প্রকাশ এপ্রিলের রাতের আকাশে দুর্লভ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক চমক কিশোরগঞ্জে ভেজাল খাদ্য তৈরির দায়ে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা মুন্সীগঞ্জে পুকুর থেকে ৩২৬ রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলি উদ্ধার গণ-অভ্যুত্থানের পর সমঝোতার সংস্কার দরকার: এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ভিসির প্রতীকী চেয়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ কুয়েট শিক্ষার্থীদের আবাসিকে গ্যাস সংযোগ নিয়ে প্রতারণা: সতর্ক করলো তিতাস গ্যাস

ভারতের শেয়ারবাজারে ট্রিলিয়ন ডলারের ধস, মধ্যবিত্তের মাথায় হাত

ভারতের শেয়ারবাজারে সম্প্রতি বড় ধরনের পতন দেখা দিয়েছে, যার ফলে বাজারে বিনিয়োগকারী লাখ লাখ কোটি রুপি হারিয়েছেন। বিশেষ করে ভারতীয় মধ্যবিত্তদের মধ্যে এই পতনের কারণে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

২০১৮ সালে, যখন ভারতের শেয়ারবাজার চাঙ্গা ছিল, তখন অনেক সাধারণ মানুষ নিজেদের সঞ্চয় শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডে বিনিয়োগ করেছিলেন। বিহারের প্রকৌশলী রাজেশ কুমারও দুই বছর আগে তার সঞ্চয় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু এখন তার বিনিয়োগ বহু মাস ধরে লোকসানের মুখে।

ভারতের শেয়ারবাজারে এই ধসের পেছনে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার, চীনের থেকে সরিয়ে নেওয়া অর্থ, অতিমূল্যায়িত শেয়ার ও দুর্বল মুনাফার মতো কারণগুলো দায়ী বলে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে প্রায় ৯০০ বিলিয়ন ডলার মূলধন কমেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নতুন বিনিয়োগকারীরা, যাদের অনেকেই শেয়ারবাজারে প্রবেশ করেছিলেন ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবের আর্থিক পরামর্শকদের প্রভাবে।

একদিকে, নতুন বিনিয়োগকারীরা যেমন সঞ্চয় শেয়ারবাজারে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অন্যদিকে, অন্য একজন বিনিয়োগকারী তরুণ সরকার তার সঞ্চয়ের বড় অংশ মিউচুয়াল ফান্ডে রেখেছেন, তবে বর্তমানে তারা আতঙ্কিত, কারণ তারা জানেন না, কীভাবে তাদের বিনিয়োগের ভবিষ্যত হবে।

রাজেশ কুমারের মতো অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার এখন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে খুব সামান্য টাকা রাখতে পারছেন, এবং ভবিষ্যতে নিজেদের সঞ্চয় ফেরত পাওয়ার জন্য লেনদেনের ক্ষতির মুখে রয়েছেন। এমনকি, অনেকে তাদের ছেলেমেয়ের শিক্ষা ফি দিতে শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই পতন শুধু শেয়ারবাজারের লোকসানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারতের সাধারণ অর্থনীতির উপরেও এর গুরুতর প্রভাব পড়ছে। মধ্যবিত্তরা যখন চাকরি সংকট, স্থবির মজুরি, এবং শ্লথ বেসরকারি বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তখন শেয়ারবাজারের পতন তাদের আর্থিক নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি কমানোর ফলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে, এবং পরবর্তী ৬-৮ মাসের মধ্যে শেয়ারবাজার পুনরুদ্ধারের দিকে যেতে পারে।

বাজার বিশেষজ্ঞরা নতুন বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করছেন, যাতে তারা উচ্চ ঝুঁকি এড়িয়ে চলেন এবং বাজারের প্রকৃতি বুঝে বিনিয়োগ করেন। তাদের পরামর্শ, যারা মাত্র কিছুদিন আগে বিনিয়োগ শুরু করেছেন, তারা বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিন, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়।

জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় মুখোশধারীদের পেট্রলবোমা হামলা, দগ্ধ ২ নারী

ভারতের শেয়ারবাজারে ট্রিলিয়ন ডলারের ধস, মধ্যবিত্তের মাথায় হাত

প্রকাশিত: ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

ভারতের শেয়ারবাজারে সম্প্রতি বড় ধরনের পতন দেখা দিয়েছে, যার ফলে বাজারে বিনিয়োগকারী লাখ লাখ কোটি রুপি হারিয়েছেন। বিশেষ করে ভারতীয় মধ্যবিত্তদের মধ্যে এই পতনের কারণে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

২০১৮ সালে, যখন ভারতের শেয়ারবাজার চাঙ্গা ছিল, তখন অনেক সাধারণ মানুষ নিজেদের সঞ্চয় শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড এবং বন্ডে বিনিয়োগ করেছিলেন। বিহারের প্রকৌশলী রাজেশ কুমারও দুই বছর আগে তার সঞ্চয় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেছিলেন, কিন্তু এখন তার বিনিয়োগ বহু মাস ধরে লোকসানের মুখে।

ভারতের শেয়ারবাজারে এই ধসের পেছনে বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাহার, চীনের থেকে সরিয়ে নেওয়া অর্থ, অতিমূল্যায়িত শেয়ার ও দুর্বল মুনাফার মতো কারণগুলো দায়ী বলে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন। গত সেপ্টেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে প্রায় ৯০০ বিলিয়ন ডলার মূলধন কমেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নতুন বিনিয়োগকারীরা, যাদের অনেকেই শেয়ারবাজারে প্রবেশ করেছিলেন ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউবের আর্থিক পরামর্শকদের প্রভাবে।

একদিকে, নতুন বিনিয়োগকারীরা যেমন সঞ্চয় শেয়ারবাজারে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অন্যদিকে, অন্য একজন বিনিয়োগকারী তরুণ সরকার তার সঞ্চয়ের বড় অংশ মিউচুয়াল ফান্ডে রেখেছেন, তবে বর্তমানে তারা আতঙ্কিত, কারণ তারা জানেন না, কীভাবে তাদের বিনিয়োগের ভবিষ্যত হবে।

রাজেশ কুমারের মতো অনেক মধ্যবিত্ত পরিবার এখন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে খুব সামান্য টাকা রাখতে পারছেন, এবং ভবিষ্যতে নিজেদের সঞ্চয় ফেরত পাওয়ার জন্য লেনদেনের ক্ষতির মুখে রয়েছেন। এমনকি, অনেকে তাদের ছেলেমেয়ের শিক্ষা ফি দিতে শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এই পতন শুধু শেয়ারবাজারের লোকসানে সীমাবদ্ধ নয়, বরং ভারতের সাধারণ অর্থনীতির উপরেও এর গুরুতর প্রভাব পড়ছে। মধ্যবিত্তরা যখন চাকরি সংকট, স্থবির মজুরি, এবং শ্লথ বেসরকারি বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তখন শেয়ারবাজারের পতন তাদের আর্থিক নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি কমানোর ফলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে, এবং পরবর্তী ৬-৮ মাসের মধ্যে শেয়ারবাজার পুনরুদ্ধারের দিকে যেতে পারে।

বাজার বিশেষজ্ঞরা নতুন বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করছেন, যাতে তারা উচ্চ ঝুঁকি এড়িয়ে চলেন এবং বাজারের প্রকৃতি বুঝে বিনিয়োগ করেন। তাদের পরামর্শ, যারা মাত্র কিছুদিন আগে বিনিয়োগ শুরু করেছেন, তারা বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিন, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়।