নিজেদের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে প্রতিবেশী দেশ কানাডা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্য আমদানিতে তাৎক্ষণিকভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কানাডার বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কানাডিয়ান পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে তিনি ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, এটি ‘আমেরিকান পরিবারগুলোকেই প্রথম এবং সর্বাগ্রে ক্ষতি করবে’।
ট্রুডো বলেন, কানাডিয়ানরা ‘যুক্তিসঙ্গত’ এবং ‘ভদ্র’, কিন্তু লড়াই থেকে পিছপা হবে না, বিশেষ করে যখন দেশের কল্যাণ ঝুঁকিতে থাকে।
মঙ্গলবার পার্লামেন্ট হিল থেকে বক্তৃতাকালে ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন এবং বলেন, শুল্ক আরোপের বিষয়টি ‘অত্যন্ত বোকা জিনিস’। তিনি কানাডার মতো ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং মার্কিন অংশীদারের ওপর শুল্ক আরোপ করার সময় ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে (ট্রাম্পের) কাজ করার যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। অতীতে পুতিনকে ‘খুনি এবং স্বৈরশাসক’ বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রুডো।
ট্রুডো বলেন, আজ যুক্তরাষ্ট্র কানাডার বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে। (কানাডা) যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ অংশীদার এবং মিত্র, তার (আমেরিকার) সবচেয়ে কাছের বন্ধু।
এর আগে কানাডা এবং মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক কার্যকরের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাস্প। মঙ্গলবার থেকেই এ শুল্ক কার্যকরের কথা জানানো হয়। ট্রাম্পের সেই শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই মার্কিন প্রসাধনী, যন্ত্রপাতি, টায়ার, ফল এবং ওয়াইনসহ ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন আমদানিতে তাৎক্ষণিকভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ট্রুডো সরকার।
প্রয়োজনে ২১ দিনের মধ্যে আরও ১২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ট্রুডো। দুদেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে ট্রুডো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অবৈধ পদক্ষেপ’ বা শুল্ককে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনার কথাও ঘোষণা করেছেন।
ট্রুডো আমেরিকান জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এ শুল্কগুলো তাদেরকে মুদ্রাস্ফীতির দিকে পরিচালিত করবে এবং আমেরিকান চাকরি বাজারের ক্ষতি করবে, বিশেষ করে এমন কর্মক্ষেত্রে যা কানাডা থেকে সামগ্রী বা ভোক্তাদের ওপর নির্ভর করে।
তিনি ট্রাম্পকে শুল্ক পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘উত্তর আমেরিকানদের সমৃদ্ধি’ নিশ্চিত করতে দুদেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। তার মতে, তারা তাদের এজেন্ডার বিরুদ্ধে নাশকতাকেই বেছে নিয়েছে। আজকের এ শুল্কের জন্য একেবারেই কোনো যুক্তি বা আরোপের প্রয়োজন নেই।