যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির বৈঠক উত্তেজনা এবং বাক-বিতণ্ডায় পণ্ড হয়ে যায়। এ জন্য জেলেনস্কিকেই দায়ী করে এবং তার আচরণের কঠোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, জেলেনস্কি বৈঠকে অতিরিক্ত ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন এবং ট্রাম্পকে সংযমের পরিচয় দিতে বাধ্য করেছেন।
টেলিগ্রাম পোস্টে এ প্রসঙ্গে জাখারোভা বলেন, ‘আমি মনে করি জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত মিথ্যে বলেছেন, সেসবের মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যে ছিল ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর সময় কিয়েভ একা ছিল এবং কেউ তার পাশে ছিল না।’
‘যে হাত তাকে খাবার দেয়, সেই হাতেই কামড় দিতে উদ্যত হয়েছিলেন জেলেনস্কি। তার এই ঔদ্ধত্যের পরও ট্রাম্প এবং ভ্যান্স (মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স) তাকে শারীরিকভাবে আঘাত না করে যে সংযমের পরিচয় দিয়েছেন, তা রীতিমতো বিস্ময়কর।’
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, জেলেনস্কিকে ‘কোকেন ক্লাউন’ বলে আক্রমণ করেন এবং তাকে ‘অকৃতজ্ঞ শূকর’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তরের চুক্তি বিষয়ে বৈঠকে ট্রাম্প ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানোর আহ্বান জানান, কিন্তু জেলেনস্কি তা ব্যর্থভাবে গ্রহণ করেন। এতে বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প জেলেনস্কিকে চলে যেতে বলেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থার প্রধান নির্বাহী ইয়েভগেনি প্রিমাকভ এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, বৈঠকের সবকিছু সবাই দেখেছে। কিয়েভের স্বভাব প্রধান দিকটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সেখানে। আর সেটি হলো উসকানি, ঘৃণ্য উসকানি।
কিন্তু জেলেনস্কি ট্রাম্পের বক্তব্যের তাৎপর্য বুঝতে ব্যর্থ হন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তার জবাবে বৈঠকে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে বলেন যে তার কৃতজ্ঞতাবোধের অভাব রয়েছে।
এভাবে এক-দুই কথায় বৈঠকের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে ট্রাম্প তার সহকারীদের মাধ্যমে জেলেনস্কিকে চলে যেতে বলেন। ফলে ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির শুক্রবারের বৈঠক কার্যত পণ্ড হয়।