ঢাকা ০২:৩৭:১১ এএম, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সন্তুষ্ট এডিবি: অর্থ উপদেষ্টা কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ চলতি বছর ২০০ টন বীজধান উৎপাদনের লক্ষ্য বাকৃবির দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়াল ২৭.৩৫ বিলিয়ন ডলার দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদন ১৬ মে থেকে সম্পূর্ণ অনলাইনে হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় নিন্দা জামায়াত আমিরের ফেনীতে কিশোরদের অপরাধের অভিযোগে দুই মাকে নাকে খত দিতে বাধ্য, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সিরাজগঞ্জে দুইজনকে পাঁচ মাস আটকে রাখার ঘটনায় আরাফাতের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় গাজীপুরে আটক ৪ জন হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ

স্কুলে যাওয়ার আগেই বিনামূল্যের পাঠ্যবই উঠেছে বিক্রির হাটে

নতুন বছরের সব পাঠ্যবই এখনো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হয়নি। বিকল্প হিসেবে ওয়েবসাইটে বইগুলোর পিডিএফ কপি আপলোড করেছে এনসিটিবি। যাতে শিক্ষার্থীরা ডাউনলোড করে বইগুলো পড়তে পারেন। কিন্তু বিনামূল্যের বই বিতরণে দেরি হওয়ার ফায়দা লুটছেন অসাধু প্রকাশকরা। বরাবরের মতোই তারা চড়া মূল্যে বিক্রির জন্য বইয়ের দোকানে বিনামূল্যের বই সরবরাহ করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট ও বাংলাবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় মাধ্যমিকের বিনামূল্যের পাঠ্যবই চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে মোল্লা প্রিন্টার্স প্রকাশিত ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর বইও রয়েছে।

ওই বই দুটির সূত্র ধরে কথা হয় মোল্লা প্রিন্টার্স এর দায়িত্বশীলদের সঙ্গে। তবে বিনামূল্যের বই বিক্রির জন্য দোকানে তোলার কথা অস্বীকার করেন তারা। তাদের দাবি, স্কুল থেকেই এসব বই বাজারে গেছে।

কিন্তু, যে বই এখনো স্কুলেই যায়নি, স্কুলগুলো সেই বই কিভাবে বাজারে দিলো এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মেলেনি। একাধিক অভিভাবক উচ্চ মূল্যে বিনামূল্যের বই কেনার কথা জানিয়েছেন।

যদিও প্রতি বছরই সব নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে জানুয়ারি, এমনকি ফেব্রুয়ারিও গড়িয়ে যায়। তবু এবার স্কুল ও মাদরাসার পাঠ্যবইয়ের জঞ্জাল সাফ, সঠিক ইতিহাস সংযোজন, ভারতে ছাপা বন্ধ ও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট ভাঙ্গায় পাঠ্যবই পেতে কিছুটা দেরি হবে মর্মে ছাত্র-জনতার অভুত্থানে সরকার পতনের পরপরই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আগে থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেকেই গত দুই মাস ধরে আগাম ঘোষণা দিয়েছেন এবারে বই পেতে দেরি হবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী অভিভাবকদেরকে এও জানানো হয়েছিলো যে, ছাপায় কিছুটা দেরি হলেও অনলাইনে সব শ্রেণির সব পরিমার্জিত বই পাওয়া যাবে। যাতে করে পিডিএফ প্রিন্ট করে পড়াশোনা শুরু করা যায়।

তারপরও পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধা পাওয়া মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অসহযোগিতা, কাগজ ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট ইত্যাদি প্রতিবন্ধকতা সামলে গত ১ জানুয়ারি থেকেই বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হয়েছে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় সব বই বিতরণের কিছু লক্ষমাত্রাও নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা প্রশাসন। কিন্তু, বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও বই এর দোকানে প্রকাশ্যে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রি ঠেকানো যায়নি। এসব দোকানে যে কোনো মুহূর্তে অভিযান চালানো হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপার কাজ করছে এনসিটিবি। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে ৭ জানুয়ারি অব্দি প্রায় ১১ কোটি বই দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

জনপ্রিয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সন্তুষ্ট এডিবি: অর্থ উপদেষ্টা

স্কুলে যাওয়ার আগেই বিনামূল্যের পাঠ্যবই উঠেছে বিক্রির হাটে

প্রকাশিত: ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

নতুন বছরের সব পাঠ্যবই এখনো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হয়নি। বিকল্প হিসেবে ওয়েবসাইটে বইগুলোর পিডিএফ কপি আপলোড করেছে এনসিটিবি। যাতে শিক্ষার্থীরা ডাউনলোড করে বইগুলো পড়তে পারেন। কিন্তু বিনামূল্যের বই বিতরণে দেরি হওয়ার ফায়দা লুটছেন অসাধু প্রকাশকরা। বরাবরের মতোই তারা চড়া মূল্যে বিক্রির জন্য বইয়ের দোকানে বিনামূল্যের বই সরবরাহ করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট ও বাংলাবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় মাধ্যমিকের বিনামূল্যের পাঠ্যবই চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে মোল্লা প্রিন্টার্স প্রকাশিত ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর বইও রয়েছে।

ওই বই দুটির সূত্র ধরে কথা হয় মোল্লা প্রিন্টার্স এর দায়িত্বশীলদের সঙ্গে। তবে বিনামূল্যের বই বিক্রির জন্য দোকানে তোলার কথা অস্বীকার করেন তারা। তাদের দাবি, স্কুল থেকেই এসব বই বাজারে গেছে।

কিন্তু, যে বই এখনো স্কুলেই যায়নি, স্কুলগুলো সেই বই কিভাবে বাজারে দিলো এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মেলেনি। একাধিক অভিভাবক উচ্চ মূল্যে বিনামূল্যের বই কেনার কথা জানিয়েছেন।

যদিও প্রতি বছরই সব নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে জানুয়ারি, এমনকি ফেব্রুয়ারিও গড়িয়ে যায়। তবু এবার স্কুল ও মাদরাসার পাঠ্যবইয়ের জঞ্জাল সাফ, সঠিক ইতিহাস সংযোজন, ভারতে ছাপা বন্ধ ও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট ভাঙ্গায় পাঠ্যবই পেতে কিছুটা দেরি হবে মর্মে ছাত্র-জনতার অভুত্থানে সরকার পতনের পরপরই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আগে থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেকেই গত দুই মাস ধরে আগাম ঘোষণা দিয়েছেন এবারে বই পেতে দেরি হবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থী অভিভাবকদেরকে এও জানানো হয়েছিলো যে, ছাপায় কিছুটা দেরি হলেও অনলাইনে সব শ্রেণির সব পরিমার্জিত বই পাওয়া যাবে। যাতে করে পিডিএফ প্রিন্ট করে পড়াশোনা শুরু করা যায়।

তারপরও পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধা পাওয়া মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর অসহযোগিতা, কাগজ ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট ইত্যাদি প্রতিবন্ধকতা সামলে গত ১ জানুয়ারি থেকেই বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ শুরু হয়েছে। পরিবর্তিত বাস্তবতায় সব বই বিতরণের কিছু লক্ষমাত্রাও নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা প্রশাসন। কিন্তু, বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও বই এর দোকানে প্রকাশ্যে বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিক্রি ঠেকানো যায়নি। এসব দোকানে যে কোনো মুহূর্তে অভিযান চালানো হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬২ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপার কাজ করছে এনসিটিবি। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে ৭ জানুয়ারি অব্দি প্রায় ১১ কোটি বই দেওয়া সম্ভব হয়েছে।