ঢাকা , সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে আরাফা: তাওবা ও রহমতের মহান দিন হামজা চৌধুরীর আগমনে জোয়ার বাংলাদেশ ফুটবলে, ভুটানের বিপক্ষে আজ প্রস্তুতি ম্যাচ রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ আজ মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা ভাঙ্গায় মাহিন্দ্রা-বাস সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, আহত ৩ মাদরাসা ধ্বংস ঠেকাতে সরকারের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালিয়ে যাবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ মাংস বিক্রেতাদের সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়েছেন ভারতের গাজিয়াবাদ বিধায়ক গুর্জ ইসরাইলের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন ও ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করেছে স্পেন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি: এনবিআর চেয়ারম্যান

কাজে আসছে না ২০০ কোটি টাকার অবকাঠামো, নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সরঞ্জামাদি

রাজধানীর হাজারীবাগ বেড়িবাঁধে ৫০ শয্যা শামসুন্নেছা আরজু মনি মা ও শিশু হাসপাতাল। এটি ২০১৮ সালে উদ্বোধন হলেও এখনো আশপাশের নিম্ন-আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারেনি। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কিনতে ব্যয় হয় ২০০ কোটি টাকা। কাগজে-কলমে হাসপাতালটিতে তিনজন চিকিৎসকসহ ১৭ জন কর্মরত থাকলেও সেখানে চিকিৎসাসেবা কিংবা ওষুধ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রোগীদের। মূল্যবান চিকিৎসাসামগ্রী ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগের কার্যক্রম এখনো শুরুই করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে সপ্তাহের অধিকাংশ দিন চিকিৎসকই উপস্থিত থাকেন না। তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিনা আক্তার লিপি অসুস্থতাজনিত কারণে প্রায়ই ছুটিতে থাকেন। অন্য চিকিৎসকদের উপস্থিতিও দেখা যায় না। ফলে দুইশ কোটি টাকার হাসপাতালটি রোগীদের উপকারে আসছে না। হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, রোগীদের বিছানা, কেবিনেটসহ মূল্যবান সামগ্রী ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

৩১ ডিসেম্বর ও ৬ জানুয়ারি হাসপাতালটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসা পাওয়ার আশায় অর্ধশতাধিক গরিব রোগী হাসপাতালটির আউটডোরে ভিড় জমিয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় সেবা কার্যক্রম চলছে না। একজন ভিজিটর রোগীদের নামমাত্র পরামর্শ দিচ্ছেন।

তাছাড়া হাসপাতালের ৮তলা ভবনটিতে অপারেশন থিয়েটার, পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, রোগীদের সাধারণ বিছানা, কেবিনসহ পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আন্তঃবিভাগ সেবা চালু করতে পারেনি। হাসপাতাল ভবনের পাশেই আরেকটি আটতলা ভবন করা হয়েছে চিকিৎসকদের ডরমেটরি হিসাবে। কিন্তু সেখানে থাকছে কয়েকজন আউটসোর্সিং ও মাস্টাররোল কর্মচারীর পরিবার।

হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। একজন চিকিৎসক আছেন; কিন্তু তিনি রোগী দেখেন না। অন্য দুই চিকিৎসকের কক্ষে তালা ঝুলছে। আমরা গরিব মানুষ, এখানে সরকারি সেবা পেতে আসি। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। কোনোদিন চিকিৎসককে পেলে ওষুধ সরবরাহ না থাকার অজুহাত দেওয়া হয়।

হাজারীবাগের বাসিন্দা কারিমা বলেন, আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য অনেকবার এখানে এসেছি। বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক পাইনি। একদিন চিকিৎসককে দেখাতে পারলেও কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিনা আক্তার লিপি বলেন, আমি কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন ছুটিতে ছিলাম। হাসপাতালের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান জানান, হাসপাতালটির দেখভালের দায়িত্ব তাদের নয়। এটি ডিজি অফিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং যাবতীয় বরাদ্দ সেখান থেকেই হয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মাইনুল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, হাসপাতালটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে

কাজে আসছে না ২০০ কোটি টাকার অবকাঠামো, নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সরঞ্জামাদি

প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানীর হাজারীবাগ বেড়িবাঁধে ৫০ শয্যা শামসুন্নেছা আরজু মনি মা ও শিশু হাসপাতাল। এটি ২০১৮ সালে উদ্বোধন হলেও এখনো আশপাশের নিম্ন-আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারেনি। হাসপাতালটির অবকাঠামো নির্মাণ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কিনতে ব্যয় হয় ২০০ কোটি টাকা। কাগজে-কলমে হাসপাতালটিতে তিনজন চিকিৎসকসহ ১৭ জন কর্মরত থাকলেও সেখানে চিকিৎসাসেবা কিংবা ওষুধ পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রোগীদের। মূল্যবান চিকিৎসাসামগ্রী ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগের কার্যক্রম এখনো শুরুই করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে সপ্তাহের অধিকাংশ দিন চিকিৎসকই উপস্থিত থাকেন না। তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিনা আক্তার লিপি অসুস্থতাজনিত কারণে প্রায়ই ছুটিতে থাকেন। অন্য চিকিৎসকদের উপস্থিতিও দেখা যায় না। ফলে দুইশ কোটি টাকার হাসপাতালটি রোগীদের উপকারে আসছে না। হাসপাতালটির অপারেশন থিয়েটারের যন্ত্রপাতি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, রোগীদের বিছানা, কেবিনেটসহ মূল্যবান সামগ্রী ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

৩১ ডিসেম্বর ও ৬ জানুয়ারি হাসপাতালটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসা পাওয়ার আশায় অর্ধশতাধিক গরিব রোগী হাসপাতালটির আউটডোরে ভিড় জমিয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় সেবা কার্যক্রম চলছে না। একজন ভিজিটর রোগীদের নামমাত্র পরামর্শ দিচ্ছেন।

তাছাড়া হাসপাতালের ৮তলা ভবনটিতে অপারেশন থিয়েটার, পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড, রোগীদের সাধারণ বিছানা, কেবিনসহ পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি রয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আন্তঃবিভাগ সেবা চালু করতে পারেনি। হাসপাতাল ভবনের পাশেই আরেকটি আটতলা ভবন করা হয়েছে চিকিৎসকদের ডরমেটরি হিসাবে। কিন্তু সেখানে থাকছে কয়েকজন আউটসোর্সিং ও মাস্টাররোল কর্মচারীর পরিবার।

হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজন স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করেও ডাক্তার দেখাতে পারিনি। একজন চিকিৎসক আছেন; কিন্তু তিনি রোগী দেখেন না। অন্য দুই চিকিৎসকের কক্ষে তালা ঝুলছে। আমরা গরিব মানুষ, এখানে সরকারি সেবা পেতে আসি। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। কোনোদিন চিকিৎসককে পেলে ওষুধ সরবরাহ না থাকার অজুহাত দেওয়া হয়।

হাজারীবাগের বাসিন্দা কারিমা বলেন, আমার সন্তানের চিকিৎসার জন্য অনেকবার এখানে এসেছি। বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক পাইনি। একদিন চিকিৎসককে দেখাতে পারলেও কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিনা আক্তার লিপি বলেন, আমি কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন ছুটিতে ছিলাম। হাসপাতালের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা. জিল্লুর রহমান জানান, হাসপাতালটির দেখভালের দায়িত্ব তাদের নয়। এটি ডিজি অফিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং যাবতীয় বরাদ্দ সেখান থেকেই হয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মাইনুল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, হাসপাতালটির ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।