জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের জবাব দিতে হবে, আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের সন্তানরা কাকে বাবা বলে ডাকবে। খুনি হাসিনা সারাজীবন নিজের পরিবারের গান গাইতে গাইতে ক্ষমতা ধরে রেখেছিল। শেখ হাসিনার পরিবারের ১৮ জন “মানুষ” আর এই দুই হাজার জন কি “মানুষ” না? তাদের খুন করার সময় তার বুক কাঁপেনি।’
শনিবার বেলা ১২টায় বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় সারজিস আলম বলেন, ‘১৯৭৫ সালে পরিবারের খুনের কথা শুনিয়ে তিনি ক্ষমতা সুদৃঢ় করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এখন তিনি দুই হাজার মানুষকে কীভাবে খুন করলেন।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম এই সমন্বয়ক বলেন, ‘অভ্যুত্থানের তিন মাস যেতে না যেতেই খুনি হাসিনা কীভাবে দেশে আসবেন, কীভাবে দল গোছাবেন, কীভাবে নির্বাচন করবেন– এসব কথা বলা হচ্ছে। গত ৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট) একজন ক্ষমতাপিপাষু খুনি ক্ষমতায় থাকার জন্য শিশু থেকে শুরু করে তাদের বাবা-মা-ভাইবোনকে হত্যা করেছে।’
তিনি নিহতদের রক্তাক্ত ছবি দেখিয়ে প্রশ্ন রাখেন, ‘ট্রেনিং দিয়ে হত্যাকারীদের এ দেশে আনা হয়েছিল কি? কারণ তারা যেভাবে গুলি ছুড়ে হত্যা করেছে তাতে মনে হয়েছে তারা ট্রেনিংপ্রাপ্ত– এ প্রশ্ন প্রতিটি শহীদ ও আহত পরিবারের।’
এ সময় জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৭৯ জন শহীদ পরিবারের মাঝে ৫ লাখ টাকা করে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের উদ্দেশে শুভেচ্ছা বক্তৃতায় সারজিস বলেন, ‘জুলাই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সহযোগিতা আজীবন চলতে থাকবে। বিশেষ করে, সরকারের কাছ থেকে প্রতিটি শহীদ পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা এবং পরিবারের একজন সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি রয়েছে। শহীদ পরিবারের মাঝ থেকে দাবি উঠেছে তাদের একটি সনদ দেওয়ার। যাতে যেকোনও সরকারের আমলে তারা যেন ওই সনদের আলোকে কিছুটা হলেও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন।’ এ দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি।
এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন– জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মাহিন সরকারসহ অন্যরা।
উপস্থিত ছিলেন– তিন জনের চিকিৎসক গ্রুপ। তারা নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের চিকিৎসাসেবা দেন। অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় নিহতদের স্বজন এবং আহতরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগের ছয় জেলায় ১৩৪ জন নিহতের সন্ধান পাওয়া গেলেও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ৭৯ জন যোগাযোগ করে তাদের তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন করেন। বাকিদেরও একইভাবে স্ব-স্ব এলাকার সিভিল সার্জনের মাধ্যমে তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।