ঢাকা , বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
আ.লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার ঘটনাবলী নিয়ে সচেতন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট সাম্য হত্যাকাণ্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কোথায়? এনবিআর বিলুপ্তি একটি কসমেটিক সংস্কারমাত্র: মঈন খান সৌদি-ইসরাইল সম্পর্কের পথে ট্রাম্পের কূটনৈতিক চাপ ব্রাজিলের কোচ আনচেলত্তি, আপত্তি লুলার: “বিদেশি কোচের প্রয়োজন নেই” ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে নগরভবন ঘেরাও, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম আন্দোলনকারীদের গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করব না : নেতানিয়াহু পুরো কাশ্মিরকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করল ভারত আসাদগেটে অভিযান: ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ, ক্ষতিপূরণের ঘোষণা ডিএনসিসির পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনকে সরানোর সিদ্ধান্ত সরকারের

হ্যালোউইন: উৎপত্তি এবং বাস্তবতা

বিগত বছরগুলোতে আমাদের দেশগুলোতেও নজরে পড়ছে নতুন ধরণের এক উৎসবের উদযাপন— হ্যালোউইন। প্রতি বছর ৩১শে অক্টোবর পশ্চিমা বিশ্বে আয়োজিত এই উৎসব ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু কী এই হ্যালোউইন? এর উৎপত্তিই বা কোথায়? কেন পালিত হয় এই উৎসব?

 

 

হ্যালোউইন মূলত শয়তানের অনুসারীদের উৎসব। মৃত আত্মাদের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য প্রাচীন মূর্তিপূজক প্যাগানরা তিন দিন ব্যাপী অগ্নিউৎসব পালন করতো। প্যাগান বিশ্বাস মতে, ৩১শে অক্টোবর হলো বছরের সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং ভয়াবহ রাত। এই রাতে মৃত প্রেতাত্মারা জীবিতদের ক্ষতি করতে আসতো বলে তারা বিশ্বাস করতো। এজন্য এসব প্রেতাত্মার ক্ষতি থেকে বাঁচতে জীবিতরা রকমারি ভয়ঙ্কর মুখোশে নিজেদের চেহারা ঢেকে ফেলতো, এবং রাতব্যাপী আগুন জ্বেলে তার চারপাশে ঘুরতো। তাদের ধারণা ছিল এই আগুনের ধোঁয়া যতদূর যাবে ততদূর কোনো প্রেতাত্মা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

 

সময়ের পরিক্রমায় এসব প্যাগান রীতিনীতি খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারীরা নিজেদের মতো করে গ্রহণ করেন। সামহেইন তখন হয়ে যায় হলো’স ইভ তথা পবিত্র রাত্রি; যা এখন হ্যালোউইন নামে পরিচিত। তবে নাম পরিবর্তন হলেও এই উৎসবের রীতিনীতি পরিবর্তন হয়নি । এমনকি এই অনুষ্ঠানকে খ্রিষ্টান ধর্মের অংশ বলতেও নারাজ খোদ পোপ! এটাকে তিনি স্রেফ শয়তানদের অনুষ্ঠান বলেই আখ্যায়িত করেছেন।

 

কিন্তু তাহলে কীভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লো শয়তানদের এই পূজা? মূলত ১৮০০ শতাব্দীর দিকে আমেরিকায় ফসল কাটার সময়ে হ্যালোউইনের কিছু রীতিনীতি পালন করা হয়। এরপর ১৯০০ শতকের দিকে আমেরিকায় ব্যাপক ভাবে আগমন ঘটে স্কটিশ ও আইরিশ অভিবাসীদের‌; তাদের হাত ধরেই মূলত হ্যালোউইন জনপ্রিয়তা পায় সেখানে। বিশ শতকে মোটাদাগে হ্যালোউইনের বানিজ্যিকীকরণ চালু হয়, তখন থেকেই বাজারে এ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কস্টিউম বিক্রি হতে থাকে।

 

মূলত গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ব্যাপকভাবে হ্যালোউইন উদযাপনকে উৎসাহিত করা হয়। বর্তমানে এটা বড়দিনের পর ২য় বৃহত্তম উদযাপিত উৎসব। এমনকি হ্যালোউইন উদযাপনের জন্য এক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে অনেকে। হ্যালোউইনের রাতে ভুত/ ভয়ঙ্কর সাজে একে অন্যের বাড়ি গিয়ে চকলেট দাবি করা, মিষ্টি কুমড়ার গায়ে চোখ মুখ এঁকে ভুতুড়ে চেহারা দেওয়া, প্রেতাত্মাদের মতো সাজ গ্রহণ করে এ দিনকে উদযাপন করে অনেকেই।

 

কিন্তু এই যে উদযাপন, এটাকে খ্রিষ্ট ধর্মের অংশ হিসেবে প্রচার করা হলেও হ্যালোউইনের উৎপত্তি এবং বাস্তবতা হলো এটা শয়তানদের ধর্মেরই উৎসব। এমনকি ৩১শে অক্টোবরকে শয়তানদের নববর্ষ বলেও আখ্যায়িত করা হয়। শয়তান পূজারিরা মহাসমারোহে এই দিনটা পালন করে থাকেন।

 

উল্লেখ্য যে, আব্রাহামিক ধর্মগুলোতে যেমন, ইহুদি, খ্রিষ্ট ও ইসলাম ধর্মে এই উদযাপন নিষিদ্ধ। ইসলাম ধর্মে এই উৎসবে অংশ নেওয়াকে শিরকের মতো ঘৃণ্য অপরাধ বলে গণনা করা হয়। দুঃখের বিষয় হলো পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি এই ঘৃণ্য উৎসব আজ প্রসারিত হয়েছে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও। বাংলাদেশে এটা আহামরি জনপ্রিয় না হলেও শহুরে উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরা বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এসব অনুষ্ঠান পালন করছে।

 

এই ঘৃণ্য শিরকি উৎসব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং তা থেকে বিরত থাকা কাম্য। আসুন এই ৩১শে অক্টোবর আমরা হ্যালোউইন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করি এবং এটা উদযাপন থেকে নিজে এবং অন্যদের বিরত রাখি।

জনপ্রিয়

আ.লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার ঘটনাবলী নিয়ে সচেতন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট

হ্যালোউইন: উৎপত্তি এবং বাস্তবতা

প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

বিগত বছরগুলোতে আমাদের দেশগুলোতেও নজরে পড়ছে নতুন ধরণের এক উৎসবের উদযাপন— হ্যালোউইন। প্রতি বছর ৩১শে অক্টোবর পশ্চিমা বিশ্বে আয়োজিত এই উৎসব ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। কিন্তু কী এই হ্যালোউইন? এর উৎপত্তিই বা কোথায়? কেন পালিত হয় এই উৎসব?

 

 

হ্যালোউইন মূলত শয়তানের অনুসারীদের উৎসব। মৃত আত্মাদের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য প্রাচীন মূর্তিপূজক প্যাগানরা তিন দিন ব্যাপী অগ্নিউৎসব পালন করতো। প্যাগান বিশ্বাস মতে, ৩১শে অক্টোবর হলো বছরের সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং ভয়াবহ রাত। এই রাতে মৃত প্রেতাত্মারা জীবিতদের ক্ষতি করতে আসতো বলে তারা বিশ্বাস করতো। এজন্য এসব প্রেতাত্মার ক্ষতি থেকে বাঁচতে জীবিতরা রকমারি ভয়ঙ্কর মুখোশে নিজেদের চেহারা ঢেকে ফেলতো, এবং রাতব্যাপী আগুন জ্বেলে তার চারপাশে ঘুরতো। তাদের ধারণা ছিল এই আগুনের ধোঁয়া যতদূর যাবে ততদূর কোনো প্রেতাত্মা তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

 

সময়ের পরিক্রমায় এসব প্যাগান রীতিনীতি খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারীরা নিজেদের মতো করে গ্রহণ করেন। সামহেইন তখন হয়ে যায় হলো’স ইভ তথা পবিত্র রাত্রি; যা এখন হ্যালোউইন নামে পরিচিত। তবে নাম পরিবর্তন হলেও এই উৎসবের রীতিনীতি পরিবর্তন হয়নি । এমনকি এই অনুষ্ঠানকে খ্রিষ্টান ধর্মের অংশ বলতেও নারাজ খোদ পোপ! এটাকে তিনি স্রেফ শয়তানদের অনুষ্ঠান বলেই আখ্যায়িত করেছেন।

 

কিন্তু তাহলে কীভাবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লো শয়তানদের এই পূজা? মূলত ১৮০০ শতাব্দীর দিকে আমেরিকায় ফসল কাটার সময়ে হ্যালোউইনের কিছু রীতিনীতি পালন করা হয়। এরপর ১৯০০ শতকের দিকে আমেরিকায় ব্যাপক ভাবে আগমন ঘটে স্কটিশ ও আইরিশ অভিবাসীদের‌; তাদের হাত ধরেই মূলত হ্যালোউইন জনপ্রিয়তা পায় সেখানে। বিশ শতকে মোটাদাগে হ্যালোউইনের বানিজ্যিকীকরণ চালু হয়, তখন থেকেই বাজারে এ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কস্টিউম বিক্রি হতে থাকে।

 

মূলত গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ব্যাপকভাবে হ্যালোউইন উদযাপনকে উৎসাহিত করা হয়। বর্তমানে এটা বড়দিনের পর ২য় বৃহত্তম উদযাপিত উৎসব। এমনকি হ্যালোউইন উদযাপনের জন্য এক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকে অনেকে। হ্যালোউইনের রাতে ভুত/ ভয়ঙ্কর সাজে একে অন্যের বাড়ি গিয়ে চকলেট দাবি করা, মিষ্টি কুমড়ার গায়ে চোখ মুখ এঁকে ভুতুড়ে চেহারা দেওয়া, প্রেতাত্মাদের মতো সাজ গ্রহণ করে এ দিনকে উদযাপন করে অনেকেই।

 

কিন্তু এই যে উদযাপন, এটাকে খ্রিষ্ট ধর্মের অংশ হিসেবে প্রচার করা হলেও হ্যালোউইনের উৎপত্তি এবং বাস্তবতা হলো এটা শয়তানদের ধর্মেরই উৎসব। এমনকি ৩১শে অক্টোবরকে শয়তানদের নববর্ষ বলেও আখ্যায়িত করা হয়। শয়তান পূজারিরা মহাসমারোহে এই দিনটা পালন করে থাকেন।

 

উল্লেখ্য যে, আব্রাহামিক ধর্মগুলোতে যেমন, ইহুদি, খ্রিষ্ট ও ইসলাম ধর্মে এই উদযাপন নিষিদ্ধ। ইসলাম ধর্মে এই উৎসবে অংশ নেওয়াকে শিরকের মতো ঘৃণ্য অপরাধ বলে গণনা করা হয়। দুঃখের বিষয় হলো পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি এই ঘৃণ্য উৎসব আজ প্রসারিত হয়েছে মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও। বাংলাদেশে এটা আহামরি জনপ্রিয় না হলেও শহুরে উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরা বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এসব অনুষ্ঠান পালন করছে।

 

এই ঘৃণ্য শিরকি উৎসব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং তা থেকে বিরত থাকা কাম্য। আসুন এই ৩১শে অক্টোবর আমরা হ্যালোউইন সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করি এবং এটা উদযাপন থেকে নিজে এবং অন্যদের বিরত রাখি।