আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের রেল পরিবহন খাতে ৩০ বছর মেয়াদি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ উত্থাপিত জাতীয় বাজেট প্রস্তাবে এ তথ্য উঠে আসে।
তিনি বলেন, রেল পরিবহন বিশ্বব্যাপী নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী হিসেবে জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এ খাতে প্রত্যাশিত অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। তাই রেল খাতে আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যেই মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ, গেজ একীভূতকরণ, আধুনিক সিগন্যালিং, সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সংযোগ উন্নয়ন, উন্নতমানের লোকোমোটিভ ও বৈদ্যুতিক ট্র্যাকশন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়েছে এবং যমুনা রেলসেতুর কাজ শেষ হওয়ায় সেখানেও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এবারের বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাসের ঘটনা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা এবং বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
এবারের বাজেট মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির পরিধি বৃদ্ধি, গ্রামীণ কর্মসংস্থান এবং অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে।
ঈদুল আজহার ছুটি শুরুর আগে বাজেট উপস্থাপন করা হলেও সংসদ না থাকায় কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হবে না। ঘোষণার পর জনমত নিয়ে চূড়ান্ত বাজেট রূপ দেওয়া হবে। এরপর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাজেট কার্যকর হবে, যা ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে।