আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০০৮ যুগোপযোগী করে একটি নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। একই সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে, যার আওতায় ২০২৮ সালের মধ্যে ৩,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ বাতিল করা হয়েছে এবং এ আইনের আওতায় সম্পাদিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলোর পর্যালোচনার জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি রূপপুরে ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি দেশের ৫৪তম এবং ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, এবং বাজেট ঘাটতি নির্ধারিত হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে।
এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির পরিধি বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ৩ জুন, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। এবারের বাজেট সংসদ না থাকায় কোনো সংসদীয় বিতর্ক হবে না। তবে জনমত গ্রহণ করে প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্ত করা হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে বাজেট কার্যকর করবেন, যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।