জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষক ও ক্লাশ রুম সংকটে ভুগছে বিভাগটি। বিভাগের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৯ জনই ছুটিতে গেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, সহযোগী অধ্যাপক কেএম সাজ্জাদ মহসীন, তাপস কুমার দাস, সুপ্রভাত পাল, শায়লা আলম আশা ও সহকারী অধ্যাপক আবু সাঈদ, বনশ্রী রানী এবং প্রভাষক তামান্না আজিজ তুলি, আ জ ম উমর ফারুক সিদ্দিকী, লিমা আক্তার ছুটিতে আছেন।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিয়ম অনুসারে, কোনো বিভাগের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ শিক্ষক ছুটিতে থাকতে পারেন।
এত বিশালসংখ্যক শিক্ষক কিভাবে ছুটিতে আছেন? জানতে চাইলে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন রবিউল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নিয়মই ঠিকমতো মানা হয় না। পূর্বের নজির আছে এমন ছুটি নেওয়ার। তাই ছুটি দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের লোকপ্রশাসন বিভাগ থেকে ধার করা একটিমাত্র কক্ষ রয়েছে আইন বিভাগের। নেই সেমিনার লাইব্রেরির পর্যাপ্ত সুবিধা ও আলাদা ডিন অফিস। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
অনুষদ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের আগস্টে বিভাগের কার্যক্রম চালু হলেও কক্ষ সংকট থাকায় জহির রায়হান মিলনায়তনের ওপর একটি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
পরে কক্ষটিকে দুই ভাগ করে শিক্ষা কর্যক্রম চলছে, যা বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থীর জন্য মোটেও যথেষ্ট নয়। ক্লাশ রুমের অভাবে এক বর্ষের ক্লাস শেষ হওয়ার অপেক্ষায় অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সেমিনার লাইব্রেরির অভাবে আইনের গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বইগুলোও সংরক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি আইন বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জনের জন্য নেই কোনো মিটিং কক্ষ।
আইন অনুষদের ডিন আইন ও বিচার বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের ক্লাশ সংকট চরমে। আমাদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হয়েছে, আমরা সেটি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছি।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি শিক্ষক সংকট রয়েছে আইন বিভাগে। দুঃখজনকভাবে সেখানে ২ জন স্থায়ী শিক্ষক ও ১৭ জন অতিথি শিক্ষকের মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অথচ এর উলটো চিত্র হওয়া উচিত ছিল।
তিনি বলেন, আমরা খুব দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করব। এছাড়া অফিসিয়ালি তাদের একটি ক্লাশ রুম থাকলেও আমরা দুটি অস্থায়ী ক্লাস রুমের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সাময়িক সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী ৬ মাসের মধ্যে লেকচার থিয়েটারের একটা ফ্লোর আইন বিভাগকে দেওয়া হবে।