ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শিমরাইলকান্দিতে সরকারি খালের জমিতে অবৈধভাবে পাকা দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে নির্মাণাধীন ভবনের একাংশ গুড়িয়ে দিয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ১১টার দিকে এই অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তা গোস্বামী।
অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় ইট, বালু, পাথর ও কংক্রিট ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি জেলা শহরের সঙ্গে বিজয়নগর উপজেলার সংযোগকারী সড়কের পাশে ছয়টি দোকান নির্মাণ করছিলেন। তার দাবি, তিনি ওই জমি রেলওয়ের কাছ থেকে উপ-ইজারা নিয়েছেন।
তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাবিবুর রহমানের নির্মাণাধীন স্থাপনাটি সরকারি এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত খালের জায়গা, যা বিএস জরিপ অনুযায়ী ৫৭ নম্বর দাগের আওতাভুক্ত।
আদালতকে হাবিবুর রহমানের ভাতিজা দানু ভূঁইয়া জানায়, জায়গাটি তারা রেল বিভাগের একটি ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নূরু মিয়ার কাছ থেকে চুক্তিতে নিয়েছেন। রেল বিভাগের দেওয়া কাগজপত্রে উল্লেখ আছে—৬৯ নং জেএল, ২ নং খাস খতিয়ান এবং ৯১ বিএস দাগের ২৬ শতক জায়গার মধ্যে ৩০০ বর্গফুট ভূমি বাণিজ্যিক ইজারা দেওয়া হয়।
তবে বাস্তবে যে স্থানে দোকানঘর নির্মাণ হচ্ছিল, সেখানে উত্তরে ও পূর্বে সরকারি খাল এবং পশ্চিমে রাস্তা রয়েছে, যা রেল বিভাগের ইজারাপত্রে বর্ণিত সীমারেখার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তা গোস্বামী বলেন:
“তারা যে দাগে রেল থেকে জায়গা ইজারা নিয়েছেন, সেই জায়গায় নয় বরং সরকারি খালের জায়গায় স্থাপনা গড়ছেন। তারা দাগ নম্বর ভুল করেছে বলে স্বীকার করেছে এবং স্থাপনা সরানোর জন্য একদিন সময় চেয়েছে। আদালত তাদের সেই সময় দিয়েছে।”
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান:
“আমরা চুক্তিভিত্তিকভাবে জায়গাটি ইজারাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নূরু মিয়ার কাছ থেকে নিয়েছি। প্রশাসন বলছে আমাদের দাগ নম্বর ভুল। বিষয়টি রেল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধান করব।”
এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সরকারি জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের এমন দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করছে।