গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং বর্বরতার মাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। গত সোমবার ভোরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। আল-জাজিরার রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে মসজিদ এবং বেসামরিক গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়, যা ব্যাপক ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাজার বিভিন্ন শহরে চালানো বিমান হামলায় অন্তত তিনটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে এবং পাঁচটি গাড়ি পুড়ে গেছে। এর পাশাপাশি আজ-জাওয়াইদা শহরে এক বেসামরিক যানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরাইলের স্থল সেনাদের হামলা পুরো গাজা স্ট্রিপজুড়ে অব্যাহত রয়েছে, বিশেষ করে রাফাহ অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মধ্য গাজার নুসিরাত ক্যাম্পে গোলাবর্ষণে অন্তত দুই জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাজার নাসের হাসপাতালে হামাস নেতা বারহৌমসহ আরও দুটি ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
এদিকে, হামাস একটি মিসরীয় প্রস্তাবে ‘ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া’ জানিয়েছে, যার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করা এবং জিম্মি আলোচনাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাস পাঁচজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে, যার মধ্যে একজন আমেরিকান-ইসরাইলি নাগরিকও রয়েছে। বিনিময়ে, ইসরাইল এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহিত করার অনুমতি দেবে।
এদিকে, গাজা সীমান্তের কাছে একটি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ইসরাইল। এই বিমানবন্দরটি দক্ষিণ গাজা সীমান্ত থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে নেভাতিম শহরে তৈরি হবে, যেখানে ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন রয়েছে। নতুন বিমানবন্দরটি বছরে দেড় কোটি যাত্রী পরিবহন করতে পারবে এবং এর নির্মাণকাজ শুরু হলে ৭ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
গাজার পরিস্থিতি যে মুহূর্তে পৌঁছেছে, তা এক কথায় ভয়াবহ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গাজার মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।