সুজানগরে বিএনপির কিছু পাতি নেতা ও কর্মীদের অপকর্মের কারণে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। ডাকাতি, দখল, চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়া এসব নেতাকর্মীদের কারণে বিএনপির তৃণমূল থেকে শীর্ষ নেতারাও বিব্রতবোধ করছেন। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় এদের শাস্তির দাবি উঠেছে।
প্রায় ৫ মাস আগে প্রকাশ্য দিনের বেলায় সোনার দোকানে ডাকাতি করেন সুজানগর পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু খাঁ এবং বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মানিক খাঁসহ তাদের কয়েক সহযোগী। ভয়ে ডাকাতির শিকার দোকান মালিক থানায় মামলা করার সাহস পাননি। সম্প্রতি সিসি টিভিতে ধারণ করা ওই ডাকাতির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এরপরও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিএনপি নেতা মজিবর খাঁ (১) চাঁদাবাজি ও জমি দখলের জন্য কুখ্যাত। চাঁদা না পেয়ে ঘরবাড়ি ভাঙচুরেরও নজির আছে তার। গত মাসে সুজন নামের এক ওয়ার্কশপ মালিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজির লাখ টাকা ওসির চাপে ফেরত দেন মজিবুর খাঁ (১)।
বিএনপি নেতা কামাল শেখের বিরুদ্ধেও রয়েছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং জমি দখলের অভিযোগ। এছাড়া পৌরসভা এলাকার চরভবানীপুর গ্রামের লেবু খাঁ একেক সময় একেক নেতার ছত্রছায়ায় থাকেন।
এসব ক্যাডার তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য ভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের গায়ে হাত তুলতেও ছাড়েন না। দলীয় পরিচয়ে কতিপয় নেতাকর্মীর এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বিব্রত বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবিএম তৌফিক হাসান আলহাজ বলেন, এসব ব্যক্তির কর্মকাণ্ডে তারা বিব্রত। এদের শাস্তি হওয়া দরকার। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ বলেন, বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জায়গা নেই। কিন্তু রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এরা একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের বিচার হওয়া উচিত।
সুজানগর থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির বিষয়টি রাজনৈতিক ছিল। মালিক হিন্দু এবং তিনি আওয়ামী লীগ করতেন। এজন্য তারা ওইসময় হামলা করে। কোনো স্বর্ণ বা টাকা-পয়সা নেয়নি। তবে মারধরের ঘটনা সত্য।
অভিযুক্তদের বক্তব্য অনুসারে, মজিবুর রহমান বলেছেন, তিনি ইউএনও অফিসে ওইদিন মারামারি ঠেকাতে গিয়েছিলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্য অভিযোগ মিথ্যা।
মজিবুর রহমান (১) জানালেন, তার সব অভিযোগ মিথ্যা। তিনি একটি দল করেন। তাই এসব অপপ্রচার।
কামাল সেখ এর ভাষ্যমতে, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রয়োজন হলে এসে দেখে যান।
এসব অপকর্মের কারণে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। দলের শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে সচেতন হলেও, স্থানীয় পর্যায়ে এসব নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত রয়েছে।