ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় মুখোশধারীদের পেট্রলবোমা হামলা, দগ্ধ ২ নারী হাতিরঝিলে দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত যুবদলকর্মী, অবস্থা আশংকাজনক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ডা. সুমিত সাহা গ্রেফতার রবার্ট এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ হাজার নথি প্রকাশ এপ্রিলের রাতের আকাশে দুর্লভ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক চমক কিশোরগঞ্জে ভেজাল খাদ্য তৈরির দায়ে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা মুন্সীগঞ্জে পুকুর থেকে ৩২৬ রাউন্ড চায়না রাইফেলের গুলি উদ্ধার গণ-অভ্যুত্থানের পর সমঝোতার সংস্কার দরকার: এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ভিসির প্রতীকী চেয়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ কুয়েট শিক্ষার্থীদের আবাসিকে গ্যাস সংযোগ নিয়ে প্রতারণা: সতর্ক করলো তিতাস গ্যাস

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী কে এই মোহাম্মদ আল-বশির?

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীদের সমর্থনে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোহাম্মদ আল-বশির।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সিরিয়ার বেশিরভাগ মানুষের কাছে স্বল্প পরিচিত এই বিদ্রোহী নেতা আসলে কে, সেই বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশিরের রাজনৈতিক পরিচিতি ইদলিব প্রদেশের বাইরে তেমন একটা পাওয়া যায়নি। স্বৈরশাসক আসাদের শাসনামলে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত ওই রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে। সেখানকার বিদ্রোহীদের গঠিত সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে আল-বশিরের।

বিদ্রোহী পরিচালিত প্রশাসনের একটি ফেসবুক পেইজে বলা হয়েছে, সিরিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির একজন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সংশ্লিষ্ট সালভেশন গভর্নমেন্টের নেতৃত্বে ছিলেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশ ও ইদলিবে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতো।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-বশির চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সিরিয়ান সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮৬ সালে ইদলিবের জাবাল যাওইয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রকাশিত জীবনবৃত্তান্তে লেখা হয়েছে, দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

এছাড়াও ইদলিব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়া ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। ইংরেজি ভাষা, প্রশাসনিক পরিকল্পনা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিষয়েও তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনে যোগদানের আগে তিনি সিরীয় একটি গ্যাস কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন তিনি।

পরে ২০২১ সালে সেই চাকরি ছেড়ে ইদলিবে বিদ্রোহীদের দলে যোগ দেন তিনি। ২০২২ ও ২০২৩ সালে সালভেশন গভর্নমেন্টের উন্নয়ন এবং মানবিক কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে কাজ করেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইদলিব প্রশাসনের শুরা কাউন্সিল বশিরকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে।

গত জানুয়ারিতে সিরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লেভান্ত টোয়েন্টি ফোরের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করা এবং ইদলিবের বাস্তুচ্যুত মানুষের মানবিক চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করেন তিনি।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দামেস্কের শাসনের বিরোধিতা করে ইদলিব প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেয় বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। পরে সব গোষ্ঠীকে এক করে ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম।

মঙ্গলবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে মোহাম্মাদ আল-বশির বলেছেন, ‘তিনি আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের নেতৃত্ব দেবেন।’

জনপ্রিয়

চট্টগ্রামে চলন্ত অটোরিকশায় মুখোশধারীদের পেট্রলবোমা হামলা, দগ্ধ ২ নারী

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী কে এই মোহাম্মদ আল-বশির?

প্রকাশিত: ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীদের সমর্থনে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোহাম্মদ আল-বশির।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সিরিয়ার বেশিরভাগ মানুষের কাছে স্বল্প পরিচিত এই বিদ্রোহী নেতা আসলে কে, সেই বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশিরের রাজনৈতিক পরিচিতি ইদলিব প্রদেশের বাইরে তেমন একটা পাওয়া যায়নি। স্বৈরশাসক আসাদের শাসনামলে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত ওই রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে। সেখানকার বিদ্রোহীদের গঠিত সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রশাসন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে আল-বশিরের।

বিদ্রোহী পরিচালিত প্রশাসনের একটি ফেসবুক পেইজে বলা হয়েছে, সিরিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির একজন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি সিরিয়ায় আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সংশ্লিষ্ট সালভেশন গভর্নমেন্টের নেতৃত্বে ছিলেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর এই সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশ ও ইদলিবে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতো।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-বশির চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সিরিয়ান সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৮৬ সালে ইদলিবের জাবাল যাওইয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সালভেশন গভর্নমেন্টের প্রকাশিত জীবনবৃত্তান্তে লেখা হয়েছে, দেশটির অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-বশির আলেপ্পো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন।

এছাড়াও ইদলিব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়া ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। ইংরেজি ভাষা, প্রশাসনিক পরিকল্পনা এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিষয়েও তার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনে যোগদানের আগে তিনি সিরীয় একটি গ্যাস কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন তিনি।

পরে ২০২১ সালে সেই চাকরি ছেড়ে ইদলিবে বিদ্রোহীদের দলে যোগ দেন তিনি। ২০২২ ও ২০২৩ সালে সালভেশন গভর্নমেন্টের উন্নয়ন এবং মানবিক কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে কাজ করেন তিনি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইদলিব প্রশাসনের শুরা কাউন্সিল বশিরকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে।

গত জানুয়ারিতে সিরিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম লেভান্ত টোয়েন্টি ফোরের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করা এবং ইদলিবের বাস্তুচ্যুত মানুষের মানবিক চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আধুনিক সরকার গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করেন তিনি।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দামেস্কের শাসনের বিরোধিতা করে ইদলিব প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেয় বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। পরে সব গোষ্ঠীকে এক করে ইদলিবের নিয়ন্ত্রণ নেয় হায়াত তাহরির আল-শাম।

মঙ্গলবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে মোহাম্মাদ আল-বশির বলেছেন, ‘তিনি আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী কর্তৃপক্ষের নেতৃত্ব দেবেন।’