ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য: নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলে স্টারমারের বৃহৎ বিনিয়োগ ঘোষণা পটুয়াখালীতে গরুবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে, এক যুবকের মৃত্যু বেলুচিস্তানে ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের কঠোর অবস্থান: সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি রেল খাতে ৩০ বছর মেয়াদি মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের লক্ষ্য বাজেটে ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০% বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য মৎস্য উৎপাদনে ৫২ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টনের লক্ষ্য নতুন বাজেটে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২৫.৮৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে প্রস্তাবিত বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ৩৮ হাজার ৭২৮ কোটি টাকার বরাদ্দ আখাউড়ায় পাহাড়ি ঢলে ১৯ গ্রাম প্লাবিত, পানিবন্দি ৪৫০ পরিবার নির্বাচন নিয়ে দ্বিতীয় দফার সংলাপে দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান

কুয়াকাটায় উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগরে বিলীন মেরিনড্রাইভ সড়ক, তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে ১৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মেরিনড্রাইভ সড়ক। সড়কটির এক-তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং দায়ীদের শাস্তির দাবি উঠেছে। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে মাত্র দুই ঘণ্টার ঢেউয়ের তাণ্ডবে হোটেল সিভিউ থেকে জাতীয় উদ্যানের ঝাউবন পর্যন্ত নির্মাণাধীন এই সড়কটির বড় অংশ ভেঙে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় এত বিপর্যয় হয়েছে।

চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে কুয়াকাটা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—মোল্লা ট্রেডার্স, আবরার ট্রেডার্স এবং এসএম ট্রেডার্স। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান তিনটি মিলিয়ে এক কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়কটি এমন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে নিয়মিত সাগরের ঢেউয়ের আঘাত পড়ে। এর ফলে অপরিকল্পিত ও দুর্বল নির্মাণকাজ ভেঙে পড়েছে।

এসএম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম মাল দাবি করেছেন, তিনি সরাসরি কাজটি করেননি, বরং সাব-কন্ট্রাকে দিয়েছেন রুহুল আমিন নামে একজনকে। একইসঙ্গে তিনি কাজটির পরিকল্পনাকে “অপরিকল্পিত সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প” হিসেবে অভিহিত করেন।

সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে তার কোনো ভূমিকা ছিল না এবং প্রকল্পটি মূল সৈকত থেকে ১০০ ফুট সাগরের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো দাবি করেন, তার মেয়াদকালে গাইডওয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দায়িত্বহীনতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বিপুল অর্থের অপচয় হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এমন প্রকল্প গ্রহণে জনস্বার্থ ও প্রকৃতি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জনপ্রিয়

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য: নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলে স্টারমারের বৃহৎ বিনিয়োগ ঘোষণা

কুয়াকাটায় উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগরে বিলীন মেরিনড্রাইভ সড়ক, তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

প্রকাশিত: ১২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় উদ্বোধনের আগেই বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে ১৩০০ মিটার দীর্ঘ একটি মেরিনড্রাইভ সড়ক। সড়কটির এক-তৃতীয়াংশ সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এবং দায়ীদের শাস্তির দাবি উঠেছে। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে মাত্র দুই ঘণ্টার ঢেউয়ের তাণ্ডবে হোটেল সিভিউ থেকে জাতীয় উদ্যানের ঝাউবন পর্যন্ত নির্মাণাধীন এই সড়কটির বড় অংশ ভেঙে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফিজিবিলিটি স্টাডি ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় এত বিপর্যয় হয়েছে।

চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে কুয়াকাটা পৌরসভার তৎকালীন মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদারের ঘনিষ্ঠ তিন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—মোল্লা ট্রেডার্স, আবরার ট্রেডার্স এবং এসএম ট্রেডার্স। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান তিনটি মিলিয়ে এক কোটি ৫০ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়কটি এমন স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে নিয়মিত সাগরের ঢেউয়ের আঘাত পড়ে। এর ফলে অপরিকল্পিত ও দুর্বল নির্মাণকাজ ভেঙে পড়েছে।

এসএম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম মাল দাবি করেছেন, তিনি সরাসরি কাজটি করেননি, বরং সাব-কন্ট্রাকে দিয়েছেন রুহুল আমিন নামে একজনকে। একইসঙ্গে তিনি কাজটির পরিকল্পনাকে “অপরিকল্পিত সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প” হিসেবে অভিহিত করেন।

সাবেক মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে তার কোনো ভূমিকা ছিল না এবং প্রকল্পটি মূল সৈকত থেকে ১০০ ফুট সাগরের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো দাবি করেন, তার মেয়াদকালে গাইডওয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

ঘটনার পরপরই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদেককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এরপর প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দায়িত্বহীনতা, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বিপুল অর্থের অপচয় হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে এমন প্রকল্প গ্রহণে জনস্বার্থ ও প্রকৃতি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।