ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত রাস ঈসা তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭১ জন। বৃহস্পতিবার রাতের ভয়াবহ এই হামলাকে হুথি বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
হুথি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আলাসাবাহি শুক্রবার এ তথ্য জানান।
মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হুথি বিদ্রোহীরা যেন জ্বালানি সংগ্রহ করতে না পারে এবং তেল বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এ হামলা চালানো হয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তেল অবকাঠামো লক্ষ্য করে এই ধরনের আক্রমণ শুধুই হুথিদের ওপর নয়, বরং সাধারণ বেসামরিক নাগরিকদের ওপরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
আলজাজিরার ইয়েমেন প্রতিনিধি মোহাম্মদ আল-আত্তাব জানিয়েছেন, হামলার সময় তেল বন্দরে কর্মীরা স্বাভাবিক কাজ করছিলেন। তখন একে একে চারটি হামলা হয়, যা সবাইকে হতবাক করে দেয়। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক কর্মী ও সাধারণ ট্রাকচালক।
রাস ঈসা, হোদেইদা এবং আস-সালিফ বন্দর—এই তিনটি বন্দর দিয়েই ইয়েমেনের ৭০ শতাংশ রপ্তানি এবং ৮০ শতাংশের বেশি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করে। তাই এসব স্থানে হামলা শুধু তাৎক্ষণিক প্রাণহানি নয়, দীর্ঘমেয়াদী মানবিক বিপর্যয়ও ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হুথি সামরিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের আল-আতিফি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এসব হামলা আমাদের মনোবল ভাঙতে পারবে না। আমরা ফিলিস্তিনের গাজাবাসীদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখব।”
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুথিরা ইসরাইলের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজে শতাধিক হামলা চালিয়েছে।
এই হামলার ঠিক পরের দিন, শুক্রবার সকালে ইসরাইল দাবি করে, ইয়েমেন থেকে তাদের লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা পরে ভূপাতিত করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ইয়েমেনের ওপর আগ্রাসন আরও বেড়েছে। মার্চ মাসের শুরুতে মাত্র দুই দিনের হামলায় সেখানে প্রাণ হারান অন্তত ৫০ জন। আর সর্বশেষ এই হামলা প্রাণহানি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা