ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকার মুসলিম সংখ্যালঘুদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু সেই মানবিক আহ্বানকে একেবারে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভঙ্গিতে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি।
গত ৮ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ১৮ এপ্রিল দেওয়া এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগকে ছলনাপূর্ণ প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করে বলেছে, ‘পশ্চিমবঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশের তরফ থেকে যে বক্তব্য এসেছে, তা ছদ্মবেশী ও ছলনাপূর্ণ প্রচেষ্টা মাত্র। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে তুলনা করা অযৌক্তিক। যেখানে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অপরাধীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ বরং নিজেদের সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় মনোনিবেশ করুক।’
প্রসঙ্গত, মুসলিম-অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন ওয়াকফ আইন নিয়ে চলমান বিক্ষোভে গত সপ্তাহে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। মালদা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলাতেও সহিংসতা ছড়ায়। প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, যান চলাচলে বিঘ্ন এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনাও ঘটে।
এই প্রেক্ষাপটে গত ১৭ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। বাংলাদেশ সরকার মুসলিমদের ওপর হামলা ও তাদের জানমালের নিরাপত্তাহানির ঘটনার নিন্দা জানায়।