ঢাকা , শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধার টাঙ্গাইলে অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু শায়েস্তাগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১৫ টি দোকান বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক

ট্রাম্পের তোপে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও, বহু শিক্ষার্থী আটক

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন শত শত বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। এ ছাড়া সতর্কতা বা নোটিশ ছাড়াই দেশটির বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বহু শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। ক্যাম্পাস বা ছাত্রাবাসের কাছ থেকে গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থীদের সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আলোড়ন তুলেছে।

ইনসাইড হায়ার এডের একটি ট্র্যাকার জানিয়েছে, ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসা বাতিলের কথা জানিয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেছেন যে, অন্তত তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল, তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে, তাদের অনেকেই গত বছর ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। অভিবাসন আইনজীবীরা বলেছেন, যাদের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাদের কেউ কেউ কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা গতিসীমা লঙ্ঘন করে গাড়ি চালিয়েছেন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের মার্কিন নাগরিকদের মতোই আইন অনুযায়ী বাক-স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক মতপ্রকাশের কারণে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করে প্রত্যর্পণের ঘটনা বিরল। তবে তাদের অস্থায়ী ভিসার কারণে তারা নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

কেন ছাত্রদের ভিসা বাতিল হচ্ছে

ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী কিছু শিক্ষার্থীর আইনজীবী বলেছেন, তাদের ভিসা আকস্মিকভাবে কোনো সতর্কতা ছাড়াই বা আপিলের সুযোগ ছাড়াই বাতিলা করা হয়েছে।

রুবিও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ভিসা শুধু পড়ালেখার জন্য এবং তাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল যে, দেশে কোনো বিদেশি নাগরিক অস্থিতিশীল কাজে জড়িত থাকলে, তার ভিসা বাতিল করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা মূলত ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন; তবে তাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তিও রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে আগে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে।

যে কারণে ভিসা-গ্রিনকার্ডের আবেদন বাতিল হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইহুদিবিদ্বেষী কোনো লেখা/কনটেন্ট পোস্ট কিংবা শেয়ার করলে বাতিল হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা অথবা স্থায়ী বসবাসের অনুমোদনপত্র গ্রিনকার্ডের আবেদন। বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস)।

ইউএসসিআইএস জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এই প্রতিষ্ঠানটির নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। শিক্ষার্থী ভিসা কিংবা গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদনকারীদের কারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে যদি ইহুদিবিরোধী বা বিদ্বেষপূর্ণ কোনো লেখা বা কন্টেন্ট পাওয়া যায়, তাহলে অবিলম্বে তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে।

এ ছাড়া হামাস, প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ, হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীসহ যেসব গোষ্ঠী ও সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—সেসব গোষ্ঠীকে সমর্থন, প্রচার ও অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ যেসব আবেদনকারীর প্রোফাইলে পাওয়া যাবে, তাদের আবেদনও বাতিল করা হবে।

জনপ্রিয়

ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ

ট্রাম্পের তোপে বিদেশি শিক্ষার্থীরাও, বহু শিক্ষার্থী আটক

প্রকাশিত: ০২:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন শত শত বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। এ ছাড়া সতর্কতা বা নোটিশ ছাড়াই দেশটির বিভিন্ন কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বহু শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। ক্যাম্পাস বা ছাত্রাবাসের কাছ থেকে গ্রেফতার এবং শিক্ষার্থীদের সাদা পোশাকের কর্মকর্তাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র আলোড়ন তুলেছে।

ইনসাইড হায়ার এডের একটি ট্র্যাকার জানিয়েছে, ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসা বাতিলের কথা জানিয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেছেন যে, অন্তত তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল, তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে, তাদের অনেকেই গত বছর ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। অভিবাসন আইনজীবীরা বলেছেন, যাদের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাদের কেউ কেউ কোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা গতিসীমা লঙ্ঘন করে গাড়ি চালিয়েছেন।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের মার্কিন নাগরিকদের মতোই আইন অনুযায়ী বাক-স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক মতপ্রকাশের কারণে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করে প্রত্যর্পণের ঘটনা বিরল। তবে তাদের অস্থায়ী ভিসার কারণে তারা নির্বাসনের ঝুঁকিতে রয়েছেন।

কেন ছাত্রদের ভিসা বাতিল হচ্ছে

ফেডারেল সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী কিছু শিক্ষার্থীর আইনজীবী বলেছেন, তাদের ভিসা আকস্মিকভাবে কোনো সতর্কতা ছাড়াই বা আপিলের সুযোগ ছাড়াই বাতিলা করা হয়েছে।

রুবিও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ভিসা শুধু পড়ালেখার জন্য এবং তাদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল যে, দেশে কোনো বিদেশি নাগরিক অস্থিতিশীল কাজে জড়িত থাকলে, তার ভিসা বাতিল করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীরা মূলত ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন; তবে তাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যক্তিও রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে আগে ফৌজদারি অভিযোগ রয়েছে।

যে কারণে ভিসা-গ্রিনকার্ডের আবেদন বাতিল হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইহুদিবিদ্বেষী কোনো লেখা/কনটেন্ট পোস্ট কিংবা শেয়ার করলে বাতিল হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা অথবা স্থায়ী বসবাসের অনুমোদনপত্র গ্রিনকার্ডের আবেদন। বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস)।

ইউএসসিআইএস জানিয়েছে, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এই প্রতিষ্ঠানটির নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে। শিক্ষার্থী ভিসা কিংবা গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদনকারীদের কারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টে যদি ইহুদিবিরোধী বা বিদ্বেষপূর্ণ কোনো লেখা বা কন্টেন্ট পাওয়া যায়, তাহলে অবিলম্বে তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হবে।

এ ছাড়া হামাস, প্যালেস্টানিয়ান ইসলামিক জিহাদ, হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীসহ যেসব গোষ্ঠী ও সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র—সেসব গোষ্ঠীকে সমর্থন, প্রচার ও অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ যেসব আবেদনকারীর প্রোফাইলে পাওয়া যাবে, তাদের আবেদনও বাতিল করা হবে।