জধানীসহ সারা দেশে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এসব অপরাধে বিশাল ভূমিকা রয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের। গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ফেসবুকসহ বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে সংগঠিত হচ্ছে এবং অপরাধমূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অপরাধী চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এসব অপরাধে তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পেশাদার অপরাধীরা, যাদের মাধ্যমে ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য, দেশে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করা।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনায় পাঁচটি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে— ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গতিবিধি, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, সামাজিক কার্যক্রম, তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং অপরাধী কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করা। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, যাতে তারা আরও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে।
এছাড়া, কিছু সময় আগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে তিনি ঢাকা শহরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য সহিংসতার আহ্বান জানান। পুলিশের দাবি, এই ধরনের অপরাধী চক্রগুলো সরকার বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এমন হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। তারা বলেন, অপরাধীদের পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে এবং তারা যাতে কোনো রাজনৈতিক দল বা ছাত্র সংগঠনে আশ্রয় না পায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখন বিভিন্ন অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, যাতে তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। পুলিশও নিশ্চিত করেছে, কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন এবং যারা আইন ভঙ্গ করছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এই পরিস্থিতিতে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্কতা ও সক্রিয়তা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট হয়েছে, যাতে সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা যায়।