ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনের রাস ঈসা বন্দরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮০, আহত ১৭১ দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামে শিশুর লাশ উদ্ধার টাঙ্গাইলে অবৈধ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু শায়েস্তাগঞ্জে আগুনে পুড়ল ১৫ টি দোকান বিডিআর হত্যাকাণ্ড: সহায়ক তথ্য আহ্বান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ জন অভিবাসী আটক ইভ্যালির অর্থ আত্মসাৎ: গ্রাহকদের মানববন্ধন ও রাসেলের গ্রেফতারের দাবি কক্সবাজার-মহেশখালী রুটে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চালু হলো সি-ট্রাক

এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা!

দীর্ঘ ৪০ বছর পর দেশের ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের আশা দেখা দিয়েছে। প্রথমবারের মতো নিবন্ধিত ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং সেখানে কর্মরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাস থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেতে পারেন। এসব শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট থেকে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাবনা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার। এর আগে কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন সচিবের নেতৃত্বে শিক্ষকদের দুঃখ মোচনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের হিসাবে বর্তমানে দেশে ৬ হাজার ৯৯৭টি (কোডভুক্ত) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা আছে। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাবে আরও পাঁচ হাজারের মতো মাদ্রাসা আছে। তার মধ্যে এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনাক্তকারী নম্বর (ইআইআইএন) আছে ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার। প্রথম ধাপে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের একজন প্রধান ধরে মোট চারজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবেন। সেই হিসাবে ৬ হাজার ৭৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারেন। এতে সরকারের খরচ হবে ১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি।

 

এদিকে গত ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন শিক্ষকরা। তাদের সরানোর জন্য কয়েক দফা পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এতেও শিক্ষকরা সেখান থেকে সরেননি। এরপর সরকারের পক্ষ হয়ে শাহবাগে যান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব এস এম মাসুদুল হক। সেসময় তিনি শিক্ষকদের জানান, সারা দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করবে সরকার। এ বছর থেকে আমরা এমপিওর কাজ শুরু করব।

 

প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একই পদ্ধতিতে পাঠদান করান প্রাথমিক স্কুল ও ইবতেদায়ী শিক্ষকরা। সারা দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা ১১ ও ১৩ গ্রেড অনুযায়ী প্রতি মাসে বেতন, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ সব ধরনের সুবিধা পান। অন্যদিকে প্রাথমিকের মতো মাদ্রাসায় একই শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ আছে এমন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সংখ্যা ৮ হাজার ৯৭২টি। প্রতিটি মাদ্রাসায় পাঁচজন করে ধরলে শিক্ষক আছেন ৪৪ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার সাড়ে চার হাজার শিক্ষক নামকাওয়াস্তে অনুদান পান। বাকি ৪০ হাজার শিক্ষক বছরের পর বছর বিনা বেতনে পাঠদানে নিয়োজিত আছেন।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৪০ বছর ধরে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার চরম বৈষম্য চলছে। সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে শিক্ষা প্রশাসনের উদাসীনতায় এভাবে অমানবিকভাবে রয়েছেন এই স্তরের শিক্ষকরা। তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন সময়ে মাঠে নামলেও কোনো লাভ হয়নি।

জনপ্রিয়

ক্রিমিয়া নিয়ে ছাড়? শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়াকে স্বীকৃতি দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: ব্লুমবার্গ

এমপিওভুক্ত হতে যাচ্ছেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা!

প্রকাশিত: ০৮:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

দীর্ঘ ৪০ বছর পর দেশের ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের আশা দেখা দিয়েছে। প্রথমবারের মতো নিবন্ধিত ১ হাজার ৫১৯টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং সেখানে কর্মরত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাস থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন-ভাতা পেতে পারেন। এসব শিক্ষকের এমপিওভুক্তির জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট থেকে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাবনা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করতে যাচ্ছে সরকার। এর আগে কয়েক দফা উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন সচিবের নেতৃত্বে শিক্ষকদের দুঃখ মোচনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের হিসাবে বর্তমানে দেশে ৬ হাজার ৯৯৭টি (কোডভুক্ত) স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা আছে। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের হিসাবে আরও পাঁচ হাজারের মতো মাদ্রাসা আছে। তার মধ্যে এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনাক্তকারী নম্বর (ইআইআইএন) আছে ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার। প্রথম ধাপে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের একজন প্রধান ধরে মোট চারজন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবেন। সেই হিসাবে ৬ হাজার ৭৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারেন। এতে সরকারের খরচ হবে ১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি।

 

এদিকে গত ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে জাতীয়করণের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেন শিক্ষকরা। তাদের সরানোর জন্য কয়েক দফা পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এতেও শিক্ষকরা সেখান থেকে সরেননি। এরপর সরকারের পক্ষ হয়ে শাহবাগে যান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব এস এম মাসুদুল হক। সেসময় তিনি শিক্ষকদের জানান, সারা দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করবে সরকার। এ বছর থেকে আমরা এমপিওর কাজ শুরু করব।

 

প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একই পদ্ধতিতে পাঠদান করান প্রাথমিক স্কুল ও ইবতেদায়ী শিক্ষকরা। সারা দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা ১১ ও ১৩ গ্রেড অনুযায়ী প্রতি মাসে বেতন, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ সব ধরনের সুবিধা পান। অন্যদিকে প্রাথমিকের মতো মাদ্রাসায় একই শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ আছে এমন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সংখ্যা ৮ হাজার ৯৭২টি। প্রতিটি মাদ্রাসায় পাঁচজন করে ধরলে শিক্ষক আছেন ৪৪ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার সাড়ে চার হাজার শিক্ষক নামকাওয়াস্তে অনুদান পান। বাকি ৪০ হাজার শিক্ষক বছরের পর বছর বিনা বেতনে পাঠদানে নিয়োজিত আছেন।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ৪০ বছর ধরে সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার চরম বৈষম্য চলছে। সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে শিক্ষা প্রশাসনের উদাসীনতায় এভাবে অমানবিকভাবে রয়েছেন এই স্তরের শিক্ষকরা। তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন সময়ে মাঠে নামলেও কোনো লাভ হয়নি।