বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলা শাখার অনুমোদিত আহ্বায়ক কমিটি যখন জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করছিল, ঠিক তখনই জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আরেকটি পক্ষ কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বিচার ও ধর্ষকের প্রকাশ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে নতুন কমিটি জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। আর বঞ্চিতরা শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির সদস্যসচিব মুবাশশির আলী, মুখ্য সংগঠক এহছান আহম্মেদ, মুখপাত্র শাহিনুর আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক মইনুল হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব নিয়ামুর রহমান, সংগঠক তাসনিম ফেরদৌস, তাবাসসুম জামান, রতন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে নবগঠিত কমিটির সবার নাম প্রকাশ করেন জেলা কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুল হক। ওই কমিটিতে জয়পুরহাট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মুবাশশির আলীকে সদস্যসচিব, রাজশাহী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী এহছান আহম্মেদ নাহিদকে মুখ্য সংগঠক ও ক্ষেতলালের সরকারি সাঈদ আলতাফুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী শাহিনুর আলমকে মুখপাত্র করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের জন্য অনুমোদন দেওয়া এ কমিটিতে ২৯৮ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জয়পুরহাট জেলা শাখার নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় ছাত্রদের একটি পক্ষ। এ দাবিতে তাঁরা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন ও আশরাফুল ইসলাম। এ সময় শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন, রাকিব হাসান, শাহিন আলম, নাঈম হোসেন, সবুজ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, “কেন্দ্র থেকে জয়পুরহাট জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। জয়পুরহাটে যাঁদের হাতে সফলতা এসেছে, তাঁদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিছু টোকাই পোলাপান ও ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতারা কমিটিতে রয়েছে। যাঁরা আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন, তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে মতামতের ভিত্তিতে কমিটি করার কথা ছিল। কিন্তু সেটি করা হয়নি। একতরফা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি আমরা মানি না।”
আরেক ছাত্র প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন বলেন, “অত্যন্ত হতাশার সঙ্গে জানাচ্ছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমরা যাঁরা প্রথম সারিতে ছিলাম। বিজয়ের দিন পর্যন্ত পাহাড়ের মতো ভূমিকা পালন করেছি, তাঁদের বাদ রেখে একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি সম্পূর্ণ ভুয়া, আজ সন্ধ্যায় বাতিল করতে হবে। না করলে আমরা আন্দোলন গড়ে তুলব।”
কমিটি প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুল হক বলেন, “জেলা আহ্বায়ক কমিটি একতরফা হয়েছে বলে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। যাঁরা আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে ছিলেন, পরবর্তী সময়েও সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁরাই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন।”