প্রতীক্ষার পালা শেষে, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ পেতে যাচ্ছে বগুড়া এয়ারফিল্ড। জরাজীর্ণ সাড়ে ৪ হাজার ফুটের রানওয়ে সম্প্রসারিত হবে ১০ হাজার ফুটে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই শুরু হবে রানওয়ে সংস্কারের কাজ। সিভিল এভিয়েশনের এমন পরিকল্পনায়, সম্মতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
৪ হাজার ৭০০ ফুট দীর্ঘ রানওয়ে, পূর্ণাঙ্গ কন্ট্রোল টাওয়ার ও টার্মিনাল ভবনসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকলেও আজ অবধি, কোনো বাণিজ্যিক বিমান উড়েনি এই বিমানবন্দরে। ২০০০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় বিমান বাহিনীকে। বিগত দুই যুগ ধরে, আকাশপথের সেবা হতে বঞ্চিত বগুড়াবাসী।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অবশেষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ নিতে যাচ্ছে, বগুড়া এয়ারফিল্ড। এরই ধারাবাহিকতায়, সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ বিমানবন্দরটি পরিদর্শন করেছেন। এখন চলছে সমীক্ষার কাজ।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, বগুড়াকে বিনিয়োগবান্ধব করতে হলে বিমানবন্দরের বিকল্প নেই। তাই বগুড়াবাসীর প্রত্যাশা ও বিমানবন্দরের উপযোগিতা বিবেচনায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি শুষ্ক মৌসুমেই শুরু হবে রানওয়ে সংস্কারের কাজ। পরে চার ধাপের প্রথম পর্যায়ে রানওয়ে আরও ৬ হাজার ফুট বৃদ্ধি করে অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহন সেবা চালু করা হবে। পরের ধাপগুলোতে উন্নীত করা হবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেন, ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমেই শুরু হবে রানওয়ে সংস্কারের কাজ। এছাড়া আপগ্রেডেশনের কাজও চলমান থাকবে।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবির ভূঁইয়া বলেন, সরকারের অনুমতির বিষয় রয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই কাজ এগিয়ে যাবে। তবে রানওয়ে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে খুব শীঘ্রই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
প্রায় চার দশকের দীর্ঘ অপেক্ষার পর, আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে বগুড়া বিমানবন্দর। যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি, কৃষি আর শিল্প পণ্য রফতানির সুযোগ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক হাব হয়ে উঠবে বগুড়া; এমনটাই বিশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামেও দীর্ঘ ১৭ বছরে আন্তর্জাতিক খেলা গড়ায়নি বিমানবন্দর না থাকার অজুহাতে। বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

এই বিমানবন্দর চালু হলে মানুষের প্রত্যাশা পূরণের সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। ফলে, বাড়বে সরকারের রাজস্বও।