ঢাকা , শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
এবার শাহবাগেই আ.লীগ নিষিদ্ধের ঝড় তুলছে জামায়াত-শিবির চট্টগ্রাম বন্দরে বিশ্বমানের অপারেটর আনা হবে: বিডা চেয়ারম্যান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি আবদুল হামিদকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে আনার ঘোষণা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সংস্কার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা প্রধান উপদেষ্টার ঈদের আগে ১৭ ও ২৪ মে খোলা থাকবে দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ, দায়িত্ব নিলেন লে. কর্নেল কামাল আকবর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থানের ডাক এনসিপির ববি ভিসির অপসারণ দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যুগপৎ আন্দোলন চবিতে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের প্রতিবন্ধী স্বীকৃতির দাবিতে বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের মানববন্ধন

গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ তদন্ত কমিশনের!

দেশে বিভিন্ন সময় গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

আজ শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। সেখানে উঠে এসেছে এ তথ্য।

কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত পাওয়া ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন বলে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ ছাড়া তার সরকারের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। একইসঙ্গে র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।

কমিশনপ্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছে, যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি আরও জানান, গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তারা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা অধ্যাপক ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তারা বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিক্টিমরা অভয় পেতে পারেন।’

প্রধান উপদেষ্টা তাদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে সেগুলো দেখতে যাবেন।

তিনি কমিশন সদস্যদের তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি ইন্টেরিম প্রতিবেদন দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ।

জনপ্রিয়

এবার শাহবাগেই আ.লীগ নিষিদ্ধের ঝড় তুলছে জামায়াত-শিবির

গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ তদন্ত কমিশনের!

প্রকাশিত: ১১:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশে বিভিন্ন সময় গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।

আজ শনিবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দিয়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। সেখানে উঠে এসেছে এ তথ্য।

কমিশন সদস্যরা এ পর্যন্ত পাওয়া ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন বলে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ ছাড়া তার সরকারের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা মিলেছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে কমিশনের প্রতিবেদনে। একইসঙ্গে র‍্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।

কমিশনপ্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছে, যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন হয়ে যায়। বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি আরও জানান, গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে তারা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার সর্বশেষ বক্তব্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা ও সঠিক বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্যরা অধ্যাপক ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানান। তারা বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিক্টিমরা অভয় পেতে পারেন।’

প্রধান উপদেষ্টা তাদের এ অনুরোধে সম্মতি দিয়ে জানান, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে সেগুলো দেখতে যাবেন।

তিনি কমিশন সদস্যদের তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি ইন্টেরিম প্রতিবেদন দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ।