বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এখন স্বচ্ছতা, সার্বভৌমত্ব, এবং পারস্পরিক আস্থার ওপর দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মুশফিকুল ফজল আনসারী।
মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোস্টে মুশফিক লিখেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রনীতি আত্মমর্যাদা ও সম্মানের ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে। শেখ হাসিনা শাসনামলের মতো কোনো দেশের তাবেদারি আর মেনে নেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এখন তার নিজস্ব বৈদেশিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে পুরোপুরি স্বাধীন। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই বিশ্ব মঞ্চে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অবস্থান নিয়েছে। এটি একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ এবং অংশীদারিত্বমূলক পররাষ্ট্রনীতি।”
৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর থেকে নতুন সরকারের অধীনে পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের একপাক্ষিক আচরণের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক প্রতিবাদলিপি পাঠানো, এমনকি আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করা—এসব ঘটনা বাংলাদেশের শক্তিশালী কূটনৈতিক অবস্থানের প্রতিফলন।
মুশফিক বলেন, “এতো দিন ভারত একপাক্ষিকভাবে যেসব সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ বরাবরই আপত্তি জানিয়েছে। তবে শেখ হাসিনা সরকারের সময় এ নিয়ে ভারতের কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়নি। বর্তমান সরকারের দৃঢ় কূটনৈতিক অবস্থান এসবের পরিবর্তন আনছে।”
মুশফিকুল ফজল আনসারী উল্লেখ করেন, “জাতীয় স্বার্থরক্ষায় বাংলাদেশের বর্তমান কণ্ঠস্বর বিশ্ব মঞ্চে আরও দৃঢ় এবং স্বতন্ত্র। বর্তমান সরকারের সাহসী কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দেশকে সমতার ভিত্তিতে অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক তৈরির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জটিল বৈশ্বিক গতিশীলতার সঙ্গে পথ চলতে প্রস্তুত। প্রতিটি কর্মকাণ্ডে দেশের মর্যাদা ও নীতি সমুন্নত রাখতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
পররাষ্ট্রনীতিতে এই পরিবর্তন দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং দীর্ঘদিনের বৈষম্যমূলক সম্পর্কের বিরুদ্ধে একটি আত্মমর্যাদাপূর্ণ অবস্থানের সূচনা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।