চট্টগ্রাম নগর এবং ১৫ উপজেলায় এবার কোরবানিতে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। আড়তদাররা বলছেন, এতে তাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। আড়তদার সমিতি সাড়ে ৪ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় ৪ লাখ পর্যন্ত চামড়া সংগ্রহ হতে পারে বলে ধারণা ছিল তাদের। যদিও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় চামড়া ফেলে চলে যান। শেষ পর্যন্ত এসব চামড়ার আশ্রয় হয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভাগাড়ে।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতি সূত্রে জানা গেছে, সংগৃহীত ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস পশুর চামড়ার মধ্যে গরুর চামড়া ছিল ৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস। এরমধ্যে নগরী থেকে গরুর চামড়া সংগ্রহ করা হয় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩০০টি এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫১টি। অপরদিকে মহিষের চামড়া ১০ হাজার ৫০০ পিস এবং ছাগলের চামড়া ছিল ৫২ হাজার ৫০০ পিস। চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুসলিম উদ্দিন বলেন, সরকারের বেধে দেয়া দর নিয়ে বুঝতে পারেনি মৌসুমী ব্যবসাীরা। সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দর বেধে দিয়েছে। একটা চামড়ায় শ্রমিক, লবণ ও অন্যান্য খরচ মিলে ৪০০–৪৫০ টাকা খরচ পড়ে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তা না বুঝে ৪০০–৬০০ টাকা দরে কাঁচা চামড়া কিনেছেন। তবে যতটা বলা হচ্ছে, চামড়া ততটা নষ্ট হয়নি। এছাড়া এবারের আবহাওয়াটা চামড়া সংরক্ষণের অনুকূলে ছিল না। অতিরিক্ত গরমের কারণে অনেক চামড়া দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী আবার বেশি লাভের আশায় চামড়া ধরে রেখেছিলেন। যার কারণে তাদের কিছু চামড়া নষ্ট হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে এক সময় ট্যানারি ছিল ৩০টি। ৮০–৯০–এর দশকের পর আস্তে আস্তে এসব ট্যানারি বন্ধ হতে থাকে। বর্তমানে রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি মাত্র ট্যানারি চালু রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর চট্টগ্রাম নগর ও উপজেলা থেকে চামড়া সংগ্রহ হয় ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯৫০টি। যার মধ্যে ২ লাখ ৯৭ হাজার ১৫০টি গরুর, ১২ হাজার ২০০টি মহিষের এবং ৫১ হাজার ৬০০টি ছাগলের চামড়া ছিল। এদিকে চলতি বছর সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ট্যানারি ব্যবসায়ীদের এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া কেনার কথা ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, গত বছর যা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল।