দেশ ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
বুধবার (১১ জুন) লন্ডনের চ্যাথাম হাউসে আয়োজিত এক নীতি সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও জানান, ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জনগণের মধ্যে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছিল।
বিচার কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও নির্বাচিত সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “১৭ বছর পর আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে সুন্দর নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এটি হবে একটি সত্যিকারের নির্বাচন।” তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক কমিশন গঠন করা হয়েছে—যেমন নির্বাচন, সংবিধান ও সিভিল সার্ভিস। বর্তমানে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য তৈরির কাজ চলছে। জুলাই মাসে ‘জুলাই সনদ’ নামে একটি রূপরেখা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।
সফরের অংশ হিসেবে ড. ইউনূস বুধবার সকালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোনাথন পাওয়েলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়।
পরে তিনি চ্যাথাম হাউসে একটি নীতি সংলাপে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নেন, যেখানে ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতিক, গবেষক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপ শেষে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং রাতে তিনি সেন্ট জেমস প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের উপস্থিতিতে দ্য কিংস ফাউন্ডেশন-এর ৩৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক রাজকীয় নৈশভোজে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক ইউনূস ও রাজা চার্লস একাধিকবার পরিবেশ সংরক্ষণ, সামাজিক ব্যবসা ও টেকসই উন্নয়নের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন। এই সফর বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।