ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে ড. ইউনূসের একান্ত বৈঠক লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক, নির্বাচনী সময় পুনর্নির্ধারণে আলোচনা ব্রিটিশ স্পিকারের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক, প্রশংসায় রাজা চার্লস লন্ডনে চার দিনের সফরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শেষ হলো ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, নৌবাহিনীর অভিযানে জব্দ অবৈধ মাছ ও জাল বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির টিয়া মাছ দ্বিতীয় দফায় ১৯ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা বিটিভি ও বেতারের আবেদন ফিরিয়ে আনতে তথ্য সচিবের আহ্বান দেশে এক দিনে করোনায় আক্রান্ত ১৫ জন, শনাক্তের হার ১১.১৯ শতাংশ ঠাকুরগাঁওয়ে ভূমি অফিসে ঘুষের ভিডিও ভাইরাল, তদন্তের আশ্বাস ইউএনও’র

চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ সাধারণ মানুষ: মাওলানা রাব্বানী

কুরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় সাধারণ মানুষ চরম হতাশায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী।

 

বুধবার (১১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের ‘গত ১০ বছরের মধ্যে এবার চামড়ার সর্বোচ্চ দর’ পাওয়ার দাবি বাস্তবতাবিরোধী এবং জনগণের অনুভূতির প্রতি অসম্মানজনক।

 

তিনি জানান, সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনার মূল সংকট চিহ্নিত করতে এবং কার্যকর সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মূল্য নির্ধারণ করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং গ্রাম ও শহরভেদে গরুর চামড়া ২০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। কোথাও কোথাও ক্রেতার অভাবে চামড়া নদী-নালা ও রাজপথে ফেলে রাখার ঘটনাও ঘটেছে, যা গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

 

ঢাকায় চামড়া সংরক্ষণের সিদ্ধান্তকে ভুল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় আনা উচিত ছিল।

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। অথচ শিল্প উপদেষ্টার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত মাত্র ৩.৭৮ লাখ পিস চামড়া ট্যানারিতে গেছে এবং আরও ৭.৫ লাখ পিস ঢাকায় জমা আছে। নাটোর মোকামে ৫ লাখ গরু ও ১৫ লাখ ছাগলের চামড়া কেনাবেচার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও বিপুল পরিমাণ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, যা ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা নির্দেশ করে।

 

তিনি জানান, সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (CETP) আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে না পারায় বাংলাদেশের অধিকাংশ ট্যানারি এলডব্লিউজি (Leather Working Group) সনদ পাচ্ছে না। ফলে ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানে চামড়া রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে। ভারতের ২৪৮টি, পাকিস্তানের ৪১টি ও থাইল্যান্ডের ২২টি প্রতিষ্ঠান এই সনদ পেলেও বাংলাদেশে অগ্রগতি নেই বললেই চলে।

 

ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানিতে একচেটিয়া একটি সিন্ডিকেট বাধা সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে রাখা, যাতে তারা পানির দামে কিনে লাভবান হতে পারে।

 

এই পরিস্থিতিতে তিনি সরকারের প্রতি চারটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন:

 

১. নীতিগত সহায়তা ও প্রণোদনা: ট্যানারিগুলোকে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন অর্জনে কারিগরি সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রণোদনা প্রদান।

২. CETP আধুনিকায়ন: আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা।

৩. আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব: ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ADB, বিশ্বব্যাংক ও জাপানের সহায়তায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।

৪. জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন: এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়ার তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য একটি কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স গঠন।

জনপ্রিয়

রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্যালেসে ড. ইউনূসের একান্ত বৈঠক

চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ সাধারণ মানুষ: মাওলানা রাব্বানী

প্রকাশিত: ০২:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

কুরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় সাধারণ মানুষ চরম হতাশায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী।

 

বুধবার (১১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের ‘গত ১০ বছরের মধ্যে এবার চামড়ার সর্বোচ্চ দর’ পাওয়ার দাবি বাস্তবতাবিরোধী এবং জনগণের অনুভূতির প্রতি অসম্মানজনক।

 

তিনি জানান, সরকার কিছু উদ্যোগ নিলেও চামড়ার বাজার ব্যবস্থাপনার মূল সংকট চিহ্নিত করতে এবং কার্যকর সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মূল্য নির্ধারণ করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং গ্রাম ও শহরভেদে গরুর চামড়া ২০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। কোথাও কোথাও ক্রেতার অভাবে চামড়া নদী-নালা ও রাজপথে ফেলে রাখার ঘটনাও ঘটেছে, যা গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

 

ঢাকায় চামড়া সংরক্ষণের সিদ্ধান্তকে ভুল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের বিবেচনায় আনা উচিত ছিল।

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবারের ঈদুল আজহায় ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। অথচ শিল্প উপদেষ্টার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত মাত্র ৩.৭৮ লাখ পিস চামড়া ট্যানারিতে গেছে এবং আরও ৭.৫ লাখ পিস ঢাকায় জমা আছে। নাটোর মোকামে ৫ লাখ গরু ও ১৫ লাখ ছাগলের চামড়া কেনাবেচার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও বিপুল পরিমাণ চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, যা ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা নির্দেশ করে।

 

তিনি জানান, সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (CETP) আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে না পারায় বাংলাদেশের অধিকাংশ ট্যানারি এলডব্লিউজি (Leather Working Group) সনদ পাচ্ছে না। ফলে ইউরোপ, আমেরিকা ও জাপানে চামড়া রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে। ভারতের ২৪৮টি, পাকিস্তানের ৪১টি ও থাইল্যান্ডের ২২টি প্রতিষ্ঠান এই সনদ পেলেও বাংলাদেশে অগ্রগতি নেই বললেই চলে।

 

ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানিতে একচেটিয়া একটি সিন্ডিকেট বাধা সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে রাখা, যাতে তারা পানির দামে কিনে লাভবান হতে পারে।

 

এই পরিস্থিতিতে তিনি সরকারের প্রতি চারটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন:

 

১. নীতিগত সহায়তা ও প্রণোদনা: ট্যানারিগুলোকে এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন অর্জনে কারিগরি সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রণোদনা প্রদান।

২. CETP আধুনিকায়ন: আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা।

৩. আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব: ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ADB, বিশ্বব্যাংক ও জাপানের সহায়তায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।

৪. জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন: এলডব্লিউজি সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়ার তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য একটি কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স গঠন।