1. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  2. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  3. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  4. [email protected] : kmarsus : কালের দিগন্ত
  5. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  6. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  7. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  8. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  9. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  10. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
  11. [email protected] : কালের দিগন্ত : কালের দিগন্ত
সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৭ পূর্বাহ্ন

৩ হাজার টন ইলিশ যাচ্ছে ভারতে

  • প্রকাশিত: রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

অবশেষে ইলিশ মাছ যাচ্ছে ভারতে। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশটিতে গতকাল শনিবার তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর ফলে ইলিশ রপ্তানি না করার সিদ্ধান্ত থেকে যেমন সরে এলো বাংলাদেশ; তেমনি ইলিশ কূটনীতিতে ভারতের প্রতি সমঝোতার বার্তাও দিয়ে রাখল।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, নজিরবিহীন বিক্ষোভ ও সহিংসতার মধ্যে গত মাসের শুরুতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেয়। এরপর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন তৈরি হয়। এর মধ্যেই এবার পূজায় প্রতিবেশী দেশটিতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ-বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। কিন্তু দেড় মাসের মাথায় সেই অবস্থান থেকে সরে আসে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে আচমকা গতকাল শনিবার ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এর আগে গতকাল শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব সুলতানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলা হয়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে রপ্তানিকারকদের আবেদনের ভিত্তিতে কিছু শর্ত পালন সাপেক্ষে ৩ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হলো। আগামী মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রপ্তানি-২ কক্ষ নম্বর ১২৭-এ আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করা হবে না। যারা আগে আবেদন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদনের দরকার নেই বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের ‘ফিশ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনে’র (মৎস্য আমদানি সংগঠন) তরফে দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, উৎসবের জন্য প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এপার বাংলায় ইলিশ চলে আসে। এ বছর তা এখনো আসেনি। উৎসবের মৌসুমে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছিল বাংলাদেশ। জানানো হয়েছিল, অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণেই এই সিদ্ধান্ত। নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ নেই। গতকাল শনিবার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানাল, দুর্গাপূজার আগে তিন হাজার টন ইলিশ পাঠানো হচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে, ভারতের যে সব ব্যবসায়ীরা মাছ আমদানির জন্য আগে আবেদন করেছিলেন, তাদের আর নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই। তবে নতুন করে যারা আবেদন করতে চান, তাদের আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ‘ফিশ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ এই প্রসঙ্গে বলেন, মাছ আসছে নিশ্চিত। একটা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে মাছের দাম কতটা কী হবে, বলা সম্ভব নয়। এমনিতেই ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া। যদি পরিমাণে বেশি আসে, তবেই দাম কম হবে। নয়তো দাম বেশিই থাকবে।’

প্রসঙ্গত, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার প্রতিবেশী ভারতে ইলিশ রপ্তানির বন্ধের কথা বলে আসছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তুলতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কয়েক দিন আগে এই উপদেষ্টা বিবিসিকে বলেছিলেন, অনেক মাছ এখনো বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে।

এবার আমরা ইলিশকে সীমান্ত পার হতে দেব না। প্রতি বছরই বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পূজা উৎসবে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হতো। কিন্তু এবার দুর্গাপূজা ঘিরে পাতে ইলিশ না পাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিখ্যাত ‘ইলিশ কূটনীতির’ প্রসঙ্গটি টেনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে ফরিদা আখতার বলেন, আগের সরকার দুর্গাপূজার সময় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিত। তারা এটাকে উপহার বলত। এইবার আমি মনে করি না, আমাদের উপহার দেয়ার দরকার আছে।

কারণ, ভারতে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানির অনুমতি দিলে আমাদের লোকজন মাছ খেতে পারবে না। হাসিনা সরকারের আমলে উৎসবের মৌসুমগুলোতে ভারতে বিপুল পরিমাণ মাছের চালান পাঠানো হয়েছে। সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও ইলিশ উপহার পাঠিয়েছিলেন তিনি।

২০১৭ সালে ভারতের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জিকেও ৩০ কেজি ইলিশ উপহার দেন শেখ হাসিনা। কিন্তু, নজিরবিহীন ছাত্র বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ইলিশ নিয়ে বাংলাদেশের কূটনীতির সুর পাল্টে যায়। যদিও ভারতে ইলিশ না পাঠানোর কারণ হিসেবে বেশি ধরা না পড়া, খারাপ আবহাওয়া এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছে নতুন সরকার।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাংলাদেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশই ইলিশ। দেশের জিডিপিতে এটি প্রায় ১ শতাংশ অবদান রাখে। বাংলাদেশের জেলেরা বছরে ছয় লাখ টন ইলিশ ধরেন এবং এই মাছের বেশির ভাগটাই আসে সমুদ্র থেকে। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বাঙালি সংস্কৃতি এবং রন্ধনপ্রণালিতে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে ইলিশ মাছ। সূ² স্বাদ এবং নানা ব্যবহারের জন্য এই মাছ প্রশংসিত। তাই ইলিশের অভাব হলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উভয় অঞ্চলের মানুষের জন্যই এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। বিগত বছরগুলোতে সরকার ভারতে দুর্গাপূজার সময় বছরে তিন থেকে পাঁচ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

স¤প্রতি ভারতের ফিস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে এক চিঠিতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিতে অনুরোধ জানায়। বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই পণ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে স্বীকৃত ইলিশ। টানা পাঁচ বছর ধরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ। যদিও ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ ছিল। ২০১৯ থেকে ভারতে আবার ইলিশ রপ্তানি চালু হয়। প্রায় প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে পাঁচ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়ে থাকেন ভারতের কলকাতার ব্যবসায়ীরা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুর্গাপূজা কিংবা পহেলা বৈশাখ আসার আগ দিয়েও এই মাছে দাম চলে যায় সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। চলতি বছর এই মাছের দাম কমেনি। সরকার পতনের আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। সরকার পতনের পর সেই দাম আরো বেড়েছে। নিষেধাজ্ঞার পরও স্থানীয় বাজারগুলোতে এই মাছটির দাম বেড়েছে।

একটি দেড় কেজি ইলিশ প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজি ২০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। আর এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবার ইলিশের দাম কেজিতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেশি পড়ছে। সরবরাহ কমে যাওয়া এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেই দাম বেড়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
©  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট