বাংলাদেশে জাতীয় পতাকা অবমাননা ও আগরতলায় উপ-হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারতের উগ্রবাদী গোষ্ঠী আমাদের জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যারা আমার দেশের পতাকাকে ছিঁড়ে দেয়, তাদের দেশের পণ্য আমরা কেন ব্যবহার করব? আমাদের মা-বোনেরা আর ভারতীয় শাড়ি কিনবে না, আমরা ভারতের টুথপেস্ট, সাবান, কিংবা অন্য কোনো পণ্য ব্যবহার করব না।
প্রতিবাদের অংশ হিসেবে রিজভী নিজের স্ত্রীর একটি ভারতীয় শাড়ি জনসম্মুখে ছুড়ে ফেলে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। তিনি জানান, এটি তার স্ত্রীর পুরনো শাড়ি, যা তিনি নিজেই এই প্রতিবাদের জন্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা টাঙ্গাইলের শাড়ি পরব, রাজশাহীর সিল্ক পরব, কুমিল্লার খদ্দর পরব, কিন্তু ভারতীয় পণ্য নয়।
দেশীয় পণ্য ব্যবহার ও উৎপাদনে সবাইকে উৎসাহিত করে তিনি বলেন, আমরা ভারতের ওপর নির্ভরশীল হব না। আমাদের দেশে পেঁয়াজ, মরিচ, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন সম্ভব। ছাদে মরিচ লাগাব, উঠানে পেঁপে গাছ লাগাব, কিন্তু ভারতীয় পণ্যের মুখাপেক্ষী হব না।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের জন্য স্লোগান দেন এবং দেশীয় পণ্য ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, ভারতীয় পণ্য কেনার মাধ্যমে তাদের অর্থনীতিকে সহায়তা করার কোনো যুক্তি নেই। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকব, কিন্তু তাদের ওপর নির্ভর করব না।
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ভারতীয় পণ্য আমদানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মাথানত করার জাতি নয়। তারা যদি আমাদের পতাকা অবমাননা করে, তাহলে আমাদের পণ্যের বাজারও বন্ধ করে দিতে হবে।
এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া অন্যান্য নেতারা বলেন, ভারতীয় পণ্য বর্জন এবং দেশীয় পণ্যের ব্যবহার দেশের স্বনির্ভরতা বাড়াতে সহায়ক হবে। নেতারা ভারতীয় পণ্য বর্জনের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশকে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার বার্তা দিতে চান।
এই কর্মসূচি শেষে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করেন, যেখানে দেশীয় পণ্য ব্যবহার এবং ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানানো হয়।