ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
আরাফা: তাওবা ও রহমতের মহান দিন হামজা চৌধুরীর আগমনে জোয়ার বাংলাদেশ ফুটবলে, ভুটানের বিপক্ষে আজ প্রস্তুতি ম্যাচ রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ আজ মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা ভাঙ্গায় মাহিন্দ্রা-বাস সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, আহত ৩ মাদরাসা ধ্বংস ঠেকাতে সরকারের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালিয়ে যাবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ মাংস বিক্রেতাদের সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়েছেন ভারতের গাজিয়াবাদ বিধায়ক গুর্জ ইসরাইলের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন ও ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করেছে স্পেন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি: এনবিআর চেয়ারম্যান খাবার আনতে যাওয়া ২৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইল

আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলন,নিহত ১ আহত অন্তত ৩০

আশুলিয়ায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ আরও চারজন

বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে আশুলিয়ায় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও চারজন। এছাড়া অন্তত ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মন্ডল গ্রুপের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকের নাম কাউসার হোসাইন খান (২৭)। তিনি আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ম্যাঙ্গো টেক্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক।

দুপুর দুইটার দিকে কাউসারের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার মো. ইউসুফ আলী।

প্রাথমিকভাবে আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার শ্রমিক নাজমুল হাসান ,সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন রাসেল ও নয়ন নামের দুই শ্রমিক।

গুলিবিদ্ধ দুজনকে পিএমকে এবং অন্য দুই জনকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিন সকাল থেকেই আশুলিয়া শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এর জেরে ১৮টি কারখানা বন্ধ রাখা হয়।

কাউসার হোসেন খান ম্যাংগো টেক্সট লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি সেখানকার সেলাই মেশিন অপারেটর ছিলেন। কাউসার আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় থাকতেন। তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামের মো. নেছার উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, বকেয়া বেতনের দাবিতে মণ্ডল গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন করছিলেন। এ নিয়ে পুলিশ, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকেরা সমাধানে বসেন। এ সময় কারখানার বাইরে কিছু শ্রমিক অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে বাইরে থাকা শ্রমিকেরা কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পাশের ন্যাচারাল ও ম্যাংগো কারখানা শ্রমিকেরাও রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁরা কারখানাগুলোতে ভাঙচুর চালিয়ে সড়কে অবস্থান নেন।

পরিস্থিতি সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে অবস্থান নেয়। শ্রমিকেরা তাদের দিকেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত হন কাউসার, ন্যাচারাল কারখানার শ্রমিক নয়ন ও রাসেল। তাঁদের মধ্যে কাউসারকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নয়ন ও রাসেল সেখানে চিকিৎসাধীন। তাঁরা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এনামুল হক মিয়া বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই কাউসারের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর তলপেটের বাঁ–পাশে ক্ষত আছে। সম্ভবত এটা গুলি।

সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া সংঘর্ষে শ্রমিক মৃত্যুর বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন, তা আমরা নিশ্চিত না।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বেলা ১২টার পর শিল্পাঞ্চলের এ  এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলেন।

এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়।

এসময়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেন। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হওয়া ছাড়াও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

সংঘর্ষ চলাকালে উত্তেজিত শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বলেও তারা জানিয়েছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

জনপ্রিয়

আরাফা: তাওবা ও রহমতের মহান দিন

আশুলিয়ায় শ্রমিক আন্দোলন,নিহত ১ আহত অন্তত ৩০

প্রকাশিত: ০৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আশুলিয়ায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ আরও চারজন

বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনে আশুলিয়ায় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও চারজন। এছাড়া অন্তত ৩০ শ্রমিক আহত হয়েছেন।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মন্ডল গ্রুপের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকের নাম কাউসার হোসাইন খান (২৭)। তিনি আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার ম্যাঙ্গো টেক্স লিমিটেড কারখানার শ্রমিক।

দুপুর দুইটার দিকে কাউসারের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার মো. ইউসুফ আলী।

প্রাথমিকভাবে আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার শ্রমিক নাজমুল হাসান ,সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন রাসেল ও নয়ন নামের দুই শ্রমিক।

গুলিবিদ্ধ দুজনকে পিএমকে এবং অন্য দুই জনকে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিন সকাল থেকেই আশুলিয়া শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এর জেরে ১৮টি কারখানা বন্ধ রাখা হয়।

কাউসার হোসেন খান ম্যাংগো টেক্সট লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি সেখানকার সেলাই মেশিন অপারেটর ছিলেন। কাউসার আশুলিয়ার টংগাবাড়ী এলাকায় থাকতেন। তিনি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামের মো. নেছার উদ্দিনের ছেলে।

জানা গেছে, বকেয়া বেতনের দাবিতে মণ্ডল গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন করছিলেন। এ নিয়ে পুলিশ, মালিকপক্ষ ও শ্রমিকেরা সমাধানে বসেন। এ সময় কারখানার বাইরে কিছু শ্রমিক অবস্থান করছিলেন। একপর্যায়ে বাইরে থাকা শ্রমিকেরা কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পাশের ন্যাচারাল ও ম্যাংগো কারখানা শ্রমিকেরাও রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁরা কারখানাগুলোতে ভাঙচুর চালিয়ে সড়কে অবস্থান নেন।

পরিস্থিতি সামলাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সড়কে অবস্থান নেয়। শ্রমিকেরা তাদের দিকেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। এর মধ্যে গুরুতর আহত হন কাউসার, ন্যাচারাল কারখানার শ্রমিক নয়ন ও রাসেল। তাঁদের মধ্যে কাউসারকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নয়ন ও রাসেল সেখানে চিকিৎসাধীন। তাঁরা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এনামুল হক মিয়া বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই কাউসারের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর তলপেটের বাঁ–পাশে ক্ষত আছে। সম্ভবত এটা গুলি।

সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুয়েল মিয়া সংঘর্ষে শ্রমিক মৃত্যুর বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে এক পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন, তা আমরা নিশ্চিত না।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বেলা ১২টার পর শিল্পাঞ্চলের এ  এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে নেমে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলেন।

এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করলে শ্রমিকদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়।

এসময়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেন। সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হওয়া ছাড়াও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

সংঘর্ষ চলাকালে উত্তেজিত শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বলেও তারা জানিয়েছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।