মক্কায় অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং হাজীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হজ্বের নতুন আইন এবং নির্দেশনা সম্বলিত নতুন বিধিমালা প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে এই বিধিমালা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে দেশটির হজ্ব কর্তৃপক্ষ।
হজ্ব কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, যারা হজ্বের নতুন আইন এবং নির্দেশনা ভঙ্গ করবেন তাদের বিরুদ্ধে এই কয়েকদিন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সৌদি পাবলিক সিকিউরিটি ডিরেক্টরেটের ঘোষণা অনুযায়ী, হজ্বের সময় মক্কায় প্রবেশ করতে সবাইকে সরকারি অনুমতিপত্র নিতে হবে। নতুন এই নির্দেশনা হজ্ব–এর সময় নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রাখার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ এবং এটি সৌদি নাগরিক ও বাসিন্দাদের উভয়ের জন্যই প্রযোজ্য। যাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র থাকবে না, তাদের শহরের চারপাশে স্থাপিত নিরাপত্তা চৌকিতে ফেরত পাঠানো হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নিম্নলিখিত একটি নথি থাকলেই কেবল মক্কায় প্রবেশ করা যাবে: (১) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত, পবিত্র স্থানগুলোতে কাজের জন্য বৈধ অনুমতিপত্র। (২) মক্কায় নিবন্ধিত বসবাসের প্রমাণপত্র (ইকামা)। (৩) সরকারিভাবে ইস্যু করা হজ্ব পারমিট।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘আবশের ইনডিভিজুয়্যালস’ (Absher Individuals) এবং ‘মুকিম’ (Muqeem)–এর মাধ্যমে অনলাইনে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হচ্ছে। এটি ‘তাসরিহ’ (Tasreeh) নামক ইউনিফায়েড পারমিট সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত। কর্মরত প্রবাসীরা হজ্ব মৌসুমে সৌদি আরবের ডিজিটাল ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পূর্ণ সংযুক্ত থাকার কারণে পাসপোর্ট অফিসে না গিয়েও এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।
এছাড়া সৌদি হজ্ব ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, হজ্বযাত্রীকে অবশ্যই ‘নুসুক’ (Nusuk) নামের সরকারি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হজ পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। এটি ডিজিটাল সমন্বিত ব্যবস্থা ‘তাসরিহ’–এর সঙ্গে যুক্ত।
মন্ত্রণালয় আরও স্পষ্ট করে বলেছে, ওমরাহ, ভিজিট বা টুরিস্ট ভিসায় হজ্ব পালনের অনুমতি মিলবে না। কর্তৃপক্ষ সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভুয়া হজ্ব ক্যাম্পেইন সম্পর্কে সতর্ক করেছে। এসব ক্যাম্পেইনে যেখানে লাইসেন্সবিহীন আবাসন বা পরিবহনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সৌদি ডেটা অ্যান্ড আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অথোরিটি (এসডিএআইএ)–এর সঙ্গে সহযোগিতায় ‘তাসরিহ’ প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। এই কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা মক্কা এবং অন্য পবিত্র স্থানগুলোতে প্রবেশকারী হজ্বযাত্রী, কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক এবং অনুমোদিত যানবাহনের জন্য পারমিট ইস্যু করে। পারমিটধারীরা ‘তাওয়াক্কালনা’ (Tawakkalna) অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের অনুমোদনের স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন।
এছাড়া, হজ্বের ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, হজ্বের মৌসুমের আগে, সৌদি আরবে অবস্থানকারী ওমরাহ ভিসা ধারীদের জন্য ২৯ এপ্রিল (১ জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি) হলো দেশত্যাগের শেষ তারিখ।
সৌদি সরকার সতর্ক করেছে, এই তারিখের পরে অবস্থানকারী ওমরাহ যাত্রীদের প্রত্যাবাসন, কারাদণ্ড এবং মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হবে। এই তারিখের পরেও অবস্থান করা সৌদি আইনের অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
সূত্র: গালফ নিউজ