ঢাকা , শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে আরাফা: তাওবা ও রহমতের মহান দিন হামজা চৌধুরীর আগমনে জোয়ার বাংলাদেশ ফুটবলে, ভুটানের বিপক্ষে আজ প্রস্তুতি ম্যাচ রিলসের নামে অশ্লীলতার প্রতিযোগিতা: ভিউয়ের পেছনে দৌড়ে সমাজ হারাচ্ছে মূল্যবোধ আজ মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা ভাঙ্গায় মাহিন্দ্রা-বাস সংঘর্ষে ৪ জন নিহত, আহত ৩ মাদরাসা ধ্বংস ঠেকাতে সরকারের বিরুদ্ধে আইনী লড়াই চালিয়ে যাবে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ মাংস বিক্রেতাদের সরাসরি গুলি করার হুমকি দিয়েছেন ভারতের গাজিয়াবাদ বিধায়ক গুর্জ ইসরাইলের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন ও ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি বাতিল করেছে স্পেন বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি: এনবিআর চেয়ারম্যান

দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও

ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রচারকদের সাধারণত বিয়ে না করার রীতি রয়েছে। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রচারককে তার পূর্ণ সময় আরএসএসের কাজেই দিতে হয়। ফলে, সংসার জীবনের ভার নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। কিন্তু সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিয়ে এ নিয়ম নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দিলীপ ঘোষ বিয়ে করেছেন তারই দলীয় সহকর্মী রিঙ্কু মজুমদারকে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই উঠেছে প্রশ্ন—আরএসএসের কট্টর নিয়মের মধ্যে থেকেও কীভাবে তিনি বিয়ে করলেন?

প্রচারকের জীবনের নিয়মকানুন

আরএসএসের বাংলা, ওড়িশা, সিকিম এবং আন্দামান-নিকোবর অঞ্চলের সহ-ক্ষেত্র প্রচার প্রমুখ ড. জিষ্ণু বসু জানান, “প্রচারকদের পূর্ণ সময় সংগঠনের জন্য উৎসর্গ করতে হয়। পরিবার বা সংসারের জন্য সময় বের করলে তা সংগঠনের মূলনীতি বিরোধী হয়ে দাঁড়ায়। এই কারণেই দ্বিতীয় সরসঙ্ঘচালক গুরুজী গোলওয়ালকরের সময় থেকেই এ রীতি চালু রয়েছে।”

প্রচারকদের দৈনন্দিন ব্যয় সংগঠন থেকেই আসে। কিন্তু কেউ যখন রাজনীতিতে যান, তখন সে খরচ বহন করে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে তিনি আর প্রচারক থাকেন না।

দিলীপ ঘোষের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে

২০১৫ সালে যখন দিলীপ ঘোষকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করে পাঠানো হয়, তখন থেকেই তিনি আর প্রচারক ছিলেন না। এরপর তিনি বিধায়ক ও পরে সাংসদ নির্বাচিত হন। এ সময় তার ব্যয়ভার বহন করেছে দল ও সরকার, না যে আরএসএস। ফলে তার জন্য বিয়েতে কোনো বাধা ছিল না।

বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “দিলীপদার তো বিয়ে করতে কোনো বাধা ছিল না। কারণ তিনি আরএসএসের প্রচারক ছিলেন না অনেক আগেই।”

প্রচারক থেকে সংসারজীবনে: ব্যতিক্রম নয়

এমন ঘটনা আগে ঘটেনি—তাও নয়। আরএসএসের প্রাক্তন বহু প্রচারকই পরবর্তী জীবনে সংসার শুরু করেছেন। যেমন, বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি প্রচারক জীবন ত্যাগ করেই সংসার শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও প্রচারক ছিলেন, যদিও তিনি পরবর্তীতে আর বিয়ে করেননি। তবে তার বিবাহিত জীবনের কথা প্রকাশ্যে এসেছে, যদিও দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্ত্রী যশোদাবেনের সঙ্গে বসবাস করেন না।

ড. জিষ্ণু বসুর মতে, “পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় মহারাষ্ট্র বা ওড়িশাতে এমন নজির অনেক বেশি। শত শত প্রাক্তন প্রচারক আছেন, যারা পরে সংসারজীবনে প্রবেশ করেছেন।”

সঙ্ঘঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতাদের কথায়, পশ্চিমবঙ্গের পরিচিত দুই প্রাক্তন প্রচারক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও অরবিন্দ মেননও পরবর্তীতে সংসারী হয়েছেন।

আরএসএস প্রচারকদের জীবনযাপন কঠোর নিয়মে আবদ্ধ। তবে কেউ যদি সংগঠনের কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়, তবে তিনি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসারজীবন বেছে নিতে পারেন। দিলীপ ঘোষের বিয়েও সেই ব্যতিক্রম নয়।

জনপ্রিয়

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে

দিলীপ ঘোষের বিয়ে ঘিরে প্রশ্ন: আরএসএস প্রচারকেরা কি বিয়ে করতে পারেন? সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদিও

প্রকাশিত: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রচারকদের সাধারণত বিয়ে না করার রীতি রয়েছে। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রচারককে তার পূর্ণ সময় আরএসএসের কাজেই দিতে হয়। ফলে, সংসার জীবনের ভার নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। কিন্তু সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাবেক সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিয়ে এ নিয়ম নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দিলীপ ঘোষ বিয়ে করেছেন তারই দলীয় সহকর্মী রিঙ্কু মজুমদারকে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই উঠেছে প্রশ্ন—আরএসএসের কট্টর নিয়মের মধ্যে থেকেও কীভাবে তিনি বিয়ে করলেন?

প্রচারকের জীবনের নিয়মকানুন

আরএসএসের বাংলা, ওড়িশা, সিকিম এবং আন্দামান-নিকোবর অঞ্চলের সহ-ক্ষেত্র প্রচার প্রমুখ ড. জিষ্ণু বসু জানান, “প্রচারকদের পূর্ণ সময় সংগঠনের জন্য উৎসর্গ করতে হয়। পরিবার বা সংসারের জন্য সময় বের করলে তা সংগঠনের মূলনীতি বিরোধী হয়ে দাঁড়ায়। এই কারণেই দ্বিতীয় সরসঙ্ঘচালক গুরুজী গোলওয়ালকরের সময় থেকেই এ রীতি চালু রয়েছে।”

প্রচারকদের দৈনন্দিন ব্যয় সংগঠন থেকেই আসে। কিন্তু কেউ যখন রাজনীতিতে যান, তখন সে খরচ বহন করে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে তিনি আর প্রচারক থাকেন না।

দিলীপ ঘোষের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে

২০১৫ সালে যখন দিলীপ ঘোষকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করে পাঠানো হয়, তখন থেকেই তিনি আর প্রচারক ছিলেন না। এরপর তিনি বিধায়ক ও পরে সাংসদ নির্বাচিত হন। এ সময় তার ব্যয়ভার বহন করেছে দল ও সরকার, না যে আরএসএস। ফলে তার জন্য বিয়েতে কোনো বাধা ছিল না।

বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “দিলীপদার তো বিয়ে করতে কোনো বাধা ছিল না। কারণ তিনি আরএসএসের প্রচারক ছিলেন না অনেক আগেই।”

প্রচারক থেকে সংসারজীবনে: ব্যতিক্রম নয়

এমন ঘটনা আগে ঘটেনি—তাও নয়। আরএসএসের প্রাক্তন বহু প্রচারকই পরবর্তী জীবনে সংসার শুরু করেছেন। যেমন, বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি প্রচারক জীবন ত্যাগ করেই সংসার শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও প্রচারক ছিলেন, যদিও তিনি পরবর্তীতে আর বিয়ে করেননি। তবে তার বিবাহিত জীবনের কথা প্রকাশ্যে এসেছে, যদিও দীর্ঘদিন ধরে তিনি স্ত্রী যশোদাবেনের সঙ্গে বসবাস করেন না।

ড. জিষ্ণু বসুর মতে, “পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় মহারাষ্ট্র বা ওড়িশাতে এমন নজির অনেক বেশি। শত শত প্রাক্তন প্রচারক আছেন, যারা পরে সংসারজীবনে প্রবেশ করেছেন।”

সঙ্ঘঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতাদের কথায়, পশ্চিমবঙ্গের পরিচিত দুই প্রাক্তন প্রচারক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও অরবিন্দ মেননও পরবর্তীতে সংসারী হয়েছেন।

আরএসএস প্রচারকদের জীবনযাপন কঠোর নিয়মে আবদ্ধ। তবে কেউ যদি সংগঠনের কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়, তবে তিনি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসারজীবন বেছে নিতে পারেন। দিলীপ ঘোষের বিয়েও সেই ব্যতিক্রম নয়।