ছাত্রশিবির কর্মী গোলাম মোর্তুজা নিহিমকে অপহরণ ও গুমের মামলায় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ সোহায়েলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মোর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ আদেশ দেন।
প্রধান কৌঁসুলি তজুল ইসলাম জানান, এ মামলায় সোহায়েলকে হাজির করতে গত ১৫ এপ্রিল আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এ মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এর আগে গত ১৫ এপ্রিল কৌঁসুলি মিজানুল ইসলাম বলেছিলেন, “২০১২ সালের দিকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর থেকে ছাত্রশিবিরের গোলাম মোর্তুজা নিহিমকে তুলে নিয়ে যায় র্যাব সদস্যরা। পরে ‘আয়নাঘর’-এ নিয়ে ৪৭ দিন আটকে রাখে। সোহায়েলের নির্দেশেই এই মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।”
২০১০ সাল থেকে দুই বছর র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক থাকা অবস্থায় ব্যাপক পরিচিতি পান সোহায়েল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চাকরিতে তার দ্রুত উন্নতি ঘটে।
দুর্নীতি, জোরপূর্বক আটক, নির্যাতন, হত্যা ও গুমসহ নানা অভিযোগের পর গত ১৯ আগস্ট সোহায়েলকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। পরদিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ সোহায়েল কমোডর থেকে রিয়ার অ্যাডমিরাল হিসেবে পদোন্নতি পান। অভিযোগ রয়েছে, কোনো জাহাজ বা ঘাঁটি কমান্ড কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কোর্স না করেই শেখ হাসিনা সরকারের আনুকূল্যে তিনি এ পদোন্নতি পেয়েছেন।
মোহাম্মদ সোহায়েল এক বছরের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত বছরের ১২ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট বন্দর চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে তাকে নৌবাহিনীর ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের কমান্ডার হিসেবে বদলি করা হয়।