বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামি আপিল বিভাগে ‘লিভ টু আপিল’ করেছেন। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামিও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
রোববার (১৫ জুন) সকালে বিষয়টি আইনজীবীদের বরাতে জানা গেছে। এর আগের দিন, শনিবার তারা এসব আবেদন জমা দেন।
এর আগে, গত ১৯ মে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম লিভ টু আপিল করেন। তার আইনজীবী জানান, মোর্শেদের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট যে মন্তব্য করেছে, তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। কারণ, তিনি মামলায় কোনো দোষ স্বীকার করেননি, বরং হাইকোর্ট তাকে দোষ স্বীকারকারী বলে উল্লেখ করেছে।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি হাইকোর্টে পৌঁছায়। এরপর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন।
হাইকোর্ট গত ১৬ মার্চ বিচারিক আদালতের দেওয়া ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন। এর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আপিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের একটি কক্ষে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় আবরার ফাহাদকে। পরদিন ভোররাতে হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আবরার ফাহাদ তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও পানি ইস্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার জেরে তাকে হত্যা করা হয় বলে তদন্তে উঠে আসে।
এ ঘটনায় পরদিন চকবাজার থানায় মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দেয় ডিবি পুলিশ।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার (অপু), মেহেদী হাসান রবিন (শান্ত), ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মাজেদুর রহমান মাজেদ, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম (তানভির), হোসেন মোহাম্মদ তোহা, শামীম বিল্লাহ, সাদাত এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমী, মিজানুর রহমান মিজান, এস এম মাহমুদ সেতু, সামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ (অমর্ত্য ইসলাম), এহতেশামুল রাব্বি (তানিম), মোর্শেদ উজ্জামান মণ্ডল (জিসান), মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- অমিত সাহা, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, আকাশ হোসেন, মুহতাসিম ফুয়াদ ও মোয়াজ আবু হোরায়রা।