রাজধানীর রামপুরায় ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জেরে দিনদুপুরে বাড়িতে ঢুকে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগের কর্মী তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট এলাকার ৪ নম্বর রোডের ডি-ব্লকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঐ তিনজনকে আটক করা হয়।
হাতিরঝিল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, মহানগর প্রজেক্ট এলাকার ৪ নম্বর রোডের ডি-ব্লকের বাড়ির ৮ তলার ফ্লাটে ঢুকে তামিমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, নিহতের বাবাসহ তিনজন ঐ বাড়িটির জমির মালিক। তাদের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্বের জেরে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে বহিরাগতসহ ডেভেলপারের লোকজন। সেখানে বাক্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তামিমের বুকে কিল-ঘুষি ছাড়াও তাকে মারধরের পর গলা টিপে ধরা হয়। এতে তামিম অচেতন হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরপরই ডেভেলপার কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি সাইফুল।
নিহত তামিমের মামা মাসুদ করিম জানান, চুয়েট থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে তামিম দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগে যোগ দেন। মহানগর প্রজেক্টের বাড়িটির ৭ তলায় পরিবারের সঙ্গে সেখানে থাকতেন। ডেভেলপার কোম্পানি প্লিজেন্ট প্রোপ্রার্টিজ (প্রা.) লিমিটেড তাদের মোট ৫টি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও কিছুতেই তারা এটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। এ নিয়ে বছরখানেক আগে একটি মামলাও করা হয়।
তিনি আরো জানান, বুধবার ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়। সেখানে ৮ তলায় দুটি ফ্ল্যাট তামিমদের দেওয়ার কথা জানানো হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে ৮ তলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছিলেন তামিম। ঐ সময় হঠাৎ ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক, কর্ণধারসহ তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তামিমকে মারধর করতে থাকে। পরে চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে এলে তাকেও মারধর করে তারা। পরে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করে সহায়তা চাওয়া হয়। এর মধ্যেই অসুস্থ বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তামিমকে মনোয়ারা হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।