র্যাব-১০-এর সাবেক অধিনায়ক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আদালতে এই মামলা করা হয়। মামলায় তাকে ‘গণহত্যার পাহারাদার’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মামলাটি করেছেন যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ কুতুবখালির রুমা বেগম। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, তার ভাগিনা রিয়াজ মোর্শেদ অপু (২৪) হত্যাকাণ্ডে ফরিদ উদ্দিন জড়িত। মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, র্যাব কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিনসহ মোট ২৮৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ফরিদ উদ্দিনসহ ৪৫ জন ঘটনাস্থলের চারপাশ পাহারা দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাকে ভিকটিমকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে বাধা দিয়েছেন এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ফরিদ উদ্দিনকে র্যাব-১০-এর অধিনায়ক হিসেবে সরিয়ে ডিআইজি এপিবিএন (পার্বত্য জেলাগুলোর কার্যালয়) পদে পদায়ন করা হয়। ছাত্র আন্দোলনের সময় তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে সাধারণ শিক্ষার্থী নেই, সরকারবিরোধী লোকজন জড়ো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা যদি প্রাণহানি ঘটাই, তাহলে এখানে ক্লিয়ার করতে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগবে।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, ফরিদ উদ্দিন যাত্রাবাড়ীর আন্দোলন দমনে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিলেন, যা গণমাধ্যমে এসেছিল। কিন্তু সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, বরং তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এমন একজন অফিসার কীভাবে বিচারের মুখোমুখি না হয়ে পদোন্নতি পায়?
ঢাকা আইনজীবী সমিতির (এডহক) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ফেসবুকে একটি পোস্টে লেখেন, যাত্রাবাড়ীতে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার মহানায়ক, ১০ মিনিটে আন্দোলন ক্লিয়ার করে ফেলবে এবং আন্দোলনকে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনা বলা র্যাব-১০-এর ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তাকে সিইও পদে পদায়ন করা হয়েছে।
মামলা দায়ের ও ছাত্র নেতাদের ক্ষোভ প্রকাশের পর থেকে ফরিদ উদ্দিন তার কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।